লাখো প্রদীপ জ্বেলে শহিদদের স্মরণ

image-395434-1613926125

‘অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে মৌলবাদ, কুশিক্ষা, পশ্চাদমুখিতা আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে এক ব্যতিক্রমী আয়োজনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও ভাষা শহিদদের স্মরণ করেছে নড়াইলবাসী।

লাখো মোমবাতি জ্বেলে শহরের কুরিরডোব মাঠে ভাষা শহিদদের স্মরণ করলেন নড়াইলবাসী। একইসঙ্গে ভাষা দিবসের ৭০তম বার্ষিকীতে ৭০টি ফানুসও ওড়ানো হয়।

রোববার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে ৬ একরের বিশাল কুরিরডোব মাঠে জমকালো এ আয়োজনে লাখো মোমবাতি একসঙ্গে জ্বলে উঠে।

যৌথভাবে প্রদীপ প্রজ্বালনের উদ্বোধন করেন জেলা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান এবং একুশ উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রফেসর মুন্সি হাফিজুর রহমান।

ভাষা শহিদদের স্মরণে এবারের লাখো মোমবাতি প্রজ্বালন অনুষ্ঠান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তার নামে উৎসর্গ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. রবিউল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু, নড়াইল পৌরসভার নব নির্বাচিত মেয়র আনজুমান আরা, একুশের আলোর সহ সভাপতি আ্যাডভোকেট ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক কচি খন্দকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সায়েদ আলী শান্ত প্রমুখ।

বিশ্বের কোথাও এ ধরনের ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় না মন্তব্য করে অনুষ্ঠানে বক্তারা এটিকে মূল্যায়ন করে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে অন্তর্ভুক্তির আবেদন জানান।

অন্ধকার ছাপিয়ে বাহারি ডিজাইনের আলোয় আলোকিত হয়ে যায় বিশাল মাঠ। শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতি সৌধ, বাংলা বর্ণমালা,আল্পনা, পাখিসহ গ্রাম বাংলার নানা ঐতিহ্য তুলে ধরা হয় এ প্রজ্বালনে।

এ সময় ‘আমার ভায়ের রক্ত রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের মধ্য দিয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের গণসংগীত শুরু হয়। নান্দনিক এ অনুষ্ঠানটি হাজার হাজার দর্শক উপভোগ করেন।

একুশ উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক প্রফেসর মুন্সি হাফিজুর রহমান ও সদস্য সচিব নাট্যব্যক্তিত্ব কচি খন্দকার বলেন, ‘অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ব্যতিক্রমী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আমাদের আকাঙ্ক্ষা এই মঙ্গল প্রদীপের আলো পৃথিবীর সমস্ত মাতৃভাষা ও সংস্কৃতিকে আলোকিত করে আরও বেশি সমৃদ্ধ করবে। সন্ত্রাস, মৌলবাদ,কুশিক্ষা, পশ্চাদমুখিতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়েই আমাদের এ আয়োজন।

এছাড়া দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা, গণসংগীত, আবৃতি, নান্দনিক পাঠ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সুলতান মঞ্চ চত্বরে নড়াইলে ব্যতিক্রমী এই অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।

Pin It