নূর হোসেনকে ইয়াবা-ফেন্সিডিল খোর আখ্যা দিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা মিথ্যাচার করেছেন। কারণ তিনি ১৯৮৭ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। আর বাংলাদেশে ইয়াবার আবির্ভাব ঘটে ১৯৯৭ সালে। নেশার আনন্দ নিতে উচ্চবিত্তদের হাতের নাগালে ছিল ওই ট্যাবলেট। তাহলে পরিবহনকর্মী নূর হোসেন একজন সাধারণ পরিবারের ছেলে হয়ে কিভাবে ইয়াবা-ফেন্সিডিল খোর হন।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদ নূর হোসেন মাদকাসক্ত ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন। তার দাবি, নূর হোসেন ইয়াবাখোর, ফেনসিডিলখোর ছিলেন।
রবিবার জাতীয় পার্টির মহানগর উত্তর শাখার উদ্যোগে গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাপা বনানীর কার্যালয়ে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, নূর হোসেন একজন শহীদ। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে বুকে ও পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’, ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লিখে জীবন্ত পোস্টার হয়েছিলেন তিনি। ছিলেন স্বৈরাচারবিরোধী মিছিলের পুরোভাগে। জিরো পয়েন্টেই এরশাদের লেলিয়ে দেয়া পুলিশ নূর হোসেনকে ওইদিন গুলি চালিয়ে হত্যা করে। দিনটি সেই থেকে ‘শহীদ নূর হোসেন দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। নূর হোসেন একজন ড্রাইভার ছিলেন। তিনি নেতা হতে মিছিলে যাননি। মিছিলে গিয়েছেন প্রাণের তাগিদে গণতন্ত্রের জন্য। দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য তিনি জীবন দিয়েছেন।
বাংলা উইকিপিডিয়ার তথ্য সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে ইয়াবার আবির্ভাব ঘটে ১৯৯৭ সালে। ২০০০ সালে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসতে শুরু করে। প্রতি পিস ইয়াবার দাম বেশি হওয়ার কারণে প্রথম দিকে উচ্চবিত্তদের মধ্যে এটি বিস্তার লাভ করে। পরে নেশার আনন্দ নিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের উঠতি বয়সি তরুণ-তরুণী, গায়ক-গায়িকা, নায়ক-নায়িকারা ইয়াবা সেবন শুরু করে।
এসব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বলা যায় নুর হোসেনের মৃত্যু ১০ বছর পর এদেশে ইয়াবা আসে। তাহলে কিভাবে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গার মুখে ‘শহীদ নূর হোসেন ইয়াবা-ফেন্সিডিল খোর’ এ কথা শোভা পায়।