নির্বাচনের পথে না হেঁটে ক্ষমতায় যেতে নানা অগণতান্ত্রিক পথ খোঁজা বিএনপির পুরনো অভ্যাস বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সরকার শাসন দীর্ঘায়িত করতে চায় বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রোববার নিজের সরকারি বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সংবিধান অনুযায়ী সরকার পরিচালনার জন্য জনগণ পাঁচ বছরের ম্যান্ডেট দেয়। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে এবং সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে পরবর্তি নির্বাচন হবে। তাই শাসন দীর্ঘায়িত করার কোনো সুযোগ নেই।
“নির্বাচনের পথে না হেঁটে ক্ষমতায় যেতে নানা অগণতান্ত্রিক পথ খোঁজা বিএনপির পুরনো অভ্যাস। তাদের দুঃশাসন এখনও মানুষকে তাড়া করে, তাই তারা জনমানুষের আস্থা হারিয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার উন্নয়ন বান্ধব সরকার। দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে নিচ্ছে বলেই জনগণ বারবার নির্বাচিত করছে।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা বিএনপি মহাসচিবকে বলতে চাই, দেশের সাধারণ মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত নয়। শেখ হাসিনা সরকারের অব্যাহত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় দেশের মানুষ উজ্জীবিত। বরং অনিয়মের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতিতে অপরাধী আর দুর্নীতিবাজরাই ভীতসন্ত্রস্ত। বিএনপি মহাসচিব দেশের মানুষের স্বস্তি দেখতে পাননা, দেখতে পান অপরাধিদের ভীতসন্ত্রস্ত মুখচ্ছবি।
“আমরা আরও বলতে চাই, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কোনো খেলা বা ষড়যন্ত্রে বিশ্বাসী নয়। বরং বার বার ষড়যন্ত্রের শিকার। দেশ পরিচালনার জন্য শেখ হাসিনা আল্লাহর উপর বিশ্বাস এবং জনগণের প্রতি আস্থাশীল। বিএনপিই পর্দার আড়ালে ষড়যন্ত্রতত্ত্বে বিশ্বাসী। তারাই ক্ষমতার জন্য অপকৌশল এবং দেশ-বিদেশে বিভিন্ন রকম খেলা খেলছে।”
যেসব জেলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এখনও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি এবং ইতিমধ্যে কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে, সেখানে অনতিবিলম্বে কাউন্সিল আয়োজনের জন্য দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশনা কথা জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, জেলা সম্মেলনের আগে উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে কাউন্সিল শেষ করে কমিটি গঠন করতে হবে । কাউন্সিল আয়োজনে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দলের ত্যাগী এবং নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “নিজস্ব বলয় তৈরি করতে মাই ম্যান দিয়ে কমিটি গঠন করা যাবেনা। চিহিত অপরাধী, চাঁদাবাজ, দখলদার, বিতর্কিত ব্যক্তি, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠির সদস্য, দুর্নীতিবাজ এবং নারী অবমাননাকারীদের দলে নেওয়া যাবেনা। ত্যাগী নেতাকর্মীদের জন্য রাজনীতিতে টিকে থাকার এবং এগিয়ে যাবার পথ করে দিতে হবে।”
স্বাস্থ্যবিধি মেনে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে কোনো বাধা নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপি মিথ্যা অভিযোগ করছে, সরকার নাকি বিভিন্ন দলের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। অথচ তারা প্রতিদিনই বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে। ধর্মভিত্তিক দলগুলো বড় বড় সভার আয়োজন করছে। স্বাস্থ্যবিধির প্রতি তোয়াক্কা না করেই বিএনপি নেতারা বিভিন্ন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখছে। অথচ বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে বানোয়াট অভিযোগ করছে।
“প্রকৃতপক্ষে, অব্যাহত মিথ্যাচারের কারণে জনগণ এখন আর তাদের ডাকে সাড়া দেয়না। জনগণ তাদের কথামালার চাতুরিতে এখন আর ভোলেনা, তারা উন্নয়ন দেখে সিদ্ধান্ত নেয় ।”
মাগুরা জেলা বিএনপির কার্যালয়ে কারা হামলা করেছে তার তদন্ত হওয়া দরকার মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি মহাসচিব ঘটনার পরপরই আওয়ামী লীগের উপর দায় চাপিয়ে বিষয়টি ভিন্ন খাতে নেওয়ার অপচেষ্টা করছেন। তড়িঘড়ি করে তার বিবৃতি ‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না’র মতো। এ ঘটনা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার।”