‘শিশুর ঘুম’ মা-বাবার কাছে এক রহস্য। রাতে যখন ঘুমাতে যাওয়া দরকার তখন তাদের জোর করেও বিছানায় নেওয়া যায় না। আবার সকালে স্কুলে যাওয়ার জন্য যখন দ্রুত ওঠা দরকার তখন তাদের ঘুম ভাঙা খুবই কষ্টকর।
বয়স অনুযায়ী অবশ্য শিশুর ঘুমের পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের হয়। যেমন- জন্মের পর ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা, ৬ মাস থেকে ১ বছর বয়সে ১৩ থেকে ১৪ ঘণ্টা, ২ থেকে ৫ বছর ১১ থেকে ১২ ঘণ্টা এবং ৬ থেকে ১৬ বছর বয়সে ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
বিভিন্ন বয়সে শিশুর ঘুমের পরিমাণ যেমন ভিন্ন, ঘুম নিয়ে বাবা-মায়ের সমস্যার ধরনও ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন- খুব ছোট শিশুদের দেখা যায় সারারাত জেগে থেকে দিনে ঘুমায়। আবার একটু বড় শিশু রাতে বিলম্বে ঘুমায়, ফলে সকালে ঘুম থেকে উঠতে চায় না। জোর করে উঠিয়ে দিলে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে সারাদিন ধরেই তাদের অবসাদ, অমনোযোগ, খাবারে অরুচি ইত্যাদি লেগে থাকে।
স্কুলপড়ূয়া বিশেষ করে টিনএজ শিশুর বিলম্বে ঘুম পাওয়ার প্রধান কারণ হলো হরমোনের প্রভাব। পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য শিশুকে মানসিকভাবে সমর্থন দিতে হবে। পড়াশোনা কিংবা অন্য কোনো বিষয় নিয়ে তাদের ভয় বা উদ্বেগের কারণ চিহ্নিত করে তা দূর করার চেষ্টা করতে হবে।
এ ছাড়া আরও কিছু নিয়ম মানলে শিশুর ঘুম নিয়ে সমস্যা অনেকটা দূর হয়। এ ক্ষেত্রে প্রথমে ঘুমের জন্য রাতে একটি সময় নির্দিষ্ট করতে হবে। এটা হতে পারে রাত ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে যে কোনো সময়। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, শিশুর যেন কমপক্ষে ৯ ঘণ্টা ঘুম হয়। পর্যাপ্ত ব্যায়াম ও খেলাধুলা ঘুমের জন্য সহায়ক হলেও ঘুমানোর ঠিক আগ মুহূর্তে ব্যায়াম করা উচিত নয়।
ঘুমানোর ঠিক আগে বেশি চিনি বা শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়াও ঠিক নয়। কারণ এতে হঠাৎ শরীরে গ্লুকোজ বেড়ে গেলেও মাঝরাতে এই গ্লুকোজের পরিমাণ হঠাৎ কমে গিয়ে ঘুমের সমস্যা করে। শিশুদের রিফ্লাক্স ডিজিজ, নাকের সমস্যা, এডনয়েড কিংবা গলার কিছু সমস্যার কারণেও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, ভালো থাকুন।