এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বাজারে রয়েছে আগাম শীতকালীন শাক সবজি, যার বেশিরভাগই বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকার মধ্যে।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে প্রচুর পরিমাণে সবজির আমদানি না আসায় দামও কমছে না। দুই-এক সপ্তাহের মধ্যেই দাম কমে কমতে পারে।
গত অক্টোবরের শুরুতেই বাজারে এসেছে শীতের সবজি শিম, মুলা, শালগম, ফুল কপি ও বাঁধা কপি। শুরু থেকেই চড়া দামে বিক্রি হওয়া এসব সবজির দাম খুব একটা কমেনি।
মিরপুর বড়বাগের সবজি বিক্রেতা মহসীন জানান, বাজারে কেজিপ্রতি শালগম ৬০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, ফুল কপি ও বাঁধা কপি ৪০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, দেশি কাচা টমেটো ৮০ টাকা, দেশি পাকা টমেটো ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আব্দুল কুদ্দুছ জানান, বাজারে এখন সবচেয়ে দামে বিক্রি হচ্ছে শসা, প্রতিকেজি ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা। সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে কাচা মরিচ, প্রতিকেজি ৪০ টাকা।
এছাড়া শালগম ৪০ টাকা, ফুল কপি ২৫ টাকা, গাজর ৭০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, সিম ৬০ টাকায় প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আর মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই বাজারে আমন মওসুমের চাল আসার সম্ভাবনার কথা বলছেন বিক্রেতারা। তবে তার আগে পুরোনো চালের দাম কেজিতে অন্তত ৩ টাকা করে বাড়ার খবর পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মওসুমের শেষ পর্যায়ে এসে ধানের দাম কিছুটা বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে চলের বাজারে।
মিরপুর-১ নম্বর বাজারে চালের পাইকারি বিক্রেতা জননী রাইস এজেন্সির পরিচালক মহিউদ্দিন হারুন বলেন, গত এক সপ্তাহে রশিদ, মোজাম্মেল ও এরফান ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দাম বস্তায় (৫০ কেজি) একশ থেকে দেড়শ টাকা করে বেড়েছে।
“ভালো মানের মিনিকেটের বস্তা ২০০০ টাকা থেকে বেড়ে ২১৫০ টাকায় উঠেছে। ১৮৫০ টাকা বস্তার মিনিকেটগুলো বিক্রি হচ্ছে ১৯৫০ টাকায়। ধানের দাম বাড়ার কারণে মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়েছেন বলে শুনেছি।”
চাঁপাইনবাবগঞ্জের চালকল নবাব রাইস এজেন্সির পরিচালক নজরুল ইসলাম রনো জানান, গত ১৫ দিন ধরেই ধানের দাম বাড়তি। গত সপ্তাহে বাজারে ধান বিক্রি হয়েছে প্রতি মণ ৮৬০ টাকায়, যা আগে বিক্রি হত ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়।
এক সপ্তাহ ধরে বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের দাম কেজিতে অন্তত ৩ টাকা করে বেড়েছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। তবে এর প্রভাব পড়েনি বোতলজাত ভোজ্য তেলে।
কারওয়ানবাজারের মুদি দোকানি জসিম উদ্দিন বলেন, “এক সপ্তাহ আগে খোলা তেল প্রতি কেজি ৭৮ টাকা থেকে বেড়ে ৮১ টাকায় পৌঁছেছে। সে কারণে আমাদের আশঙ্কা ছিল বোতলজাত তেলের দামও বাড়বে। কিন্তু বোতলজাত ভোজ্য তেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।”
বোতলজাত তেলের দাম জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের এই বিক্রেতা বলেন, “তীর ব্র্যান্ডের এক লিটার তেল ৯৬ টাকায় কেনা, একশ টাকায় বিক্রি, গাড়ে এমআরপি লেখা আছে ১০৩ টাকা।
“বসুন্ধরা ও ফ্রেশ ব্র্যান্ডের ৫ লিটারের বোতল ৪৩০ টাকায় কেনা, ৪৪০ টাকায় বিক্রি, গায়ে এমআরপি লেখা আছে ৫০৬ টাকা।”
অন্য একজন বিক্রেতা জানান, রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের ৫ লিটারের বোতলের এমআরপি আছে ৫৩০ টাকা। আগে এই তেল ৪৮৫ টাকায় কিনতে হত, এখন কোম্পানি বিক্রি করছে ৪৪৫ টাকায়।
কারওয়ান বাজারে মুদি দোকানিরা সয়াবিন তেলের বোতলের গায়ে লেখা খুচরা মূল্যের চেয়ে কম দামে বিক্রি করলেও ঢাকার অন্যান্য বাজারে তেল বিক্রি হয় এমআরপি বা গায়ে লেখা খুচরা মূল্যে।