শীত-বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাণিজ্য মেলায় দর্শনার্থীরা

DSC_3854-5e0f6fbb68298

শীতের মধ্যে শুক্রবার সাত-সকালেই বৃষ্টি নামে। এতে শীত আরও বেড়ে যায়। এর মধ্যে প্রয়োজনীয় কাজ সারতে যারা রাস্তায় বের হয়েছেন, তারাই ভোগান্তিতে পড়েছেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার শুরু পর গতকাল ছিল প্রথম ছুটির দিন। এমন বিরূপ আবহাওয়া উপেক্ষা করেই মেলায় ছুটে আসেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। বিক্রেতারা জানান, দর্শনার্থী এলেও বিক্রি তেমন হচ্ছে না। তবে দিন যত এগোবে বিক্রি তত বাড়বে।

মঙ্গলবার শুরু হয়েছে ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীকে আকৃষ্ট করতে রয়েছে নানা আয়োজন। স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলোতে রয়েছে নানা ছাড় ও অফার। শিশুদের বিনোদনের জন্য চালু হয়েছে শিশুপার্ক। এতে ট্রেন, চরকি, সাম্পান, কপ্টারসহ নানা আয়োজন রয়েছে।

মেলাপ্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও বৃষ্টিতে জনশূন্য ছিল মেলার প্রথম প্রহর। তখন দর্শনার্থীর পাশাপাশি মেলায় আসতে বেগ পেতে হয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের। বড় প্রতিষ্ঠান ছাড়া সকালে অনেক স্টল বন্ধ ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি থেমে রোদ উঁকি দেয়। তখন স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলো সাজিয়ে বসেন কর্মীরা। দুপুরের পর থেকে মেলায় আসতে শুরু করেন দর্শনার্থী। মেঘলা বিকেলে শীত-বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাড়তে থাকে আগমন। সন্ধ্যার আগেই মেলাপ্রাঙ্গণে ভিড় জমে যায়।

ওয়ালটনের প্যাভিলিয়নের বিক্রয় ব্যবস্থাপক আব্দুল হিমেল বলেন, মেলায় পণ্যের পসরা সাজিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় আছেন। বৈরী আবহাওয়ায় সকালে তাদের দেখা মেলেনি। দুপুরের পর থেকে আসতে শুরু করে সবাই। আবহাওয়া ভালো থাকলে বিকেলে ভিড় আরও অনেক হতো।

শীতের মধ্যেও আফরোজা বেগম মোহাম্মদপুর থেকে ছেলেমেয়েকে নিয়ে মেলায় এসেছেন। তিনি বলেন, অনেকটা গৃহবন্দি থেকে বাচ্চাদের বিনোদন দিতে এখানে এসেছেন। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় কিছু গৃহস্থালি সামগ্রী কিনে নেবেন। তার মতো অনেক ক্রেতা অপেক্ষা করছিলেন ছুটির দিনে মেলায় ঢুঁ দেওয়ার জন্য। আর বিক্রি এদিন থেকেই বাড়বে বলে আশায় ছিলেন বিক্রেতারা।

ঘর সাজানোর পণ্য, খাদ্য ও প্লাস্টিক পণ্যের স্টলে তুলনামূলক ভিড় বেশি ছিল। যাদের হাতে ব্যাগ দেখা গেছে, মোটামুটি সবার সঙ্গেই ছিল ঘরের সামগ্রী, বেকারি ও প্লাস্টিক পণ্যের ব্যাগ।

মেলায় শুধু ঘুরতে আসা লোকের সংখ্যাও কম নয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন মেলায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসনিম মাহমুদ বন্ধুদের নিয়ে ঘুরছেন। তিনি বলেন, মেলা থেকে এখনই তেমন কেনাকাটার ইচ্ছে নেই। মেলার শেষ দিকে ছাড়ে পছন্দসই ব্লেজার কিনবেন। এখানে ঘুরতে ভালো লাগে তাই মেলায় এসেছেন।

ক্রেতা আকৃষ্ট করতে প্যাভিলিয়নগুলোও নানাভাবে সেজেছে। আবার বিভিন্ন স্টলে চলছে পণ্য বিক্রির হাঁকডাক। রুটি মেকার, সালাদ কাটারসহ নানা সামগ্রী বিক্রির অফার দেওয়া হচ্ছে। ক্রেতারও এসব স্টলে বেশ ভিড় ছিল। বিক্রেতারা বলছেন, সকালে দর্শনার্থী ছিল না। দুপুরের পরে আসতে থাকে। বিকেলে ভিড় বেড়েছে, তবে বিক্রি সেভাবে শুরু হয়নি।

প্রাণের প্যাভিলিয়নের বিক্রয়কর্মী জাকির হোসেন বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় দর্শনার্থী খুবই কম। তবে বিকেলে কিছু বেচাকেনা হলেও সকালে হয়নি। তিনি আশা করছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে মেলার মূল বেচাকেনা শুরু হবে।

এ বছরের মেলায় প্যাভিলিয়ন ও স্টল আছে ৪৮৩টি। এখনও অনেক স্টলে সাজসজ্জার কাজ চলছে। বিক্রি জমে উঠতে আরও কিছু দিন লাগবে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকছে। মাসব্যাপী এ মেলা চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

Pin It