মাফিয়ারা কয়েকজন, এদের কোনো রাজনৈতিক ভিত্তি নেই। এজন্য মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে এদের টিকে থাকার কোনো সম্ভবনা নেই।
মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে বেনজীরের মতো সবাই পালাবে।
শুক্রবার (৩১ মে) বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টন মেহেরবা প্লাজায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান কার্যালয়ে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক সপ্তাহ’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
সভায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, রাষ্ট্র দ্বারা হওয়া নির্যাতন, নিপীড়নের মধ্যে সব থেকে নির্মম, নিষ্ঠুরতম জুলুম হচ্ছে গুম। সরকার মানুষকে বোঝাতে চায় যে যেকোন সময়, যেকোন কারণে বা অকারণে এ রাষ্ট্র চাইলেই যে কেউ গুম হয়ে যেতে পারে। এজন্য হয়তো ১০০ মানুষকে গুম করে, কিন্তু তারা ভয় দেখাতে চায় কোটি কোটি মানুষকে। যাতে করে তাদের অন্যায্য ক্ষমতার বিরুদ্ধে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হতে না পারে। বেনজীরকে যখন শুদ্ধাচার পুরস্কার দেওয়া হয় তখন কি সে নিরাপরাধ ছিল? সে তো একদিনে গড়ে উঠেনি। সরকার তার হীনস্বার্থে বেনজীরদের ব্যবহার করেছে।
তিনি বলেন, এটা এখন ফ্যাসিবাদের ধাপ অতিক্রম করে মাফিয়াতন্ত্র। এ মাফিয়ারা কয়েকজন, এদের কোন রাজনৈতিক ভিত্তি নেই। এজন্য মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে এদের টিকে থাকার কোনো সম্ভবনা নেই। মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে বেনজীরের মতো সবাই পালাবে। এ রাষ্ট্রকে গণক্ষমতাতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানাচ্ছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ হলে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ গড়তে পারবো।
হাবিবুর রহমান রিজু বলেন, স্বাধীনতার পরে জহির রায়হান থেকে শুরু করে আজ অবধি গুমের শিকার মানুষদের উপর হওয়া বাংলাদেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের দায় আছে। এ দায় নিয়েও সরকারগুলো টিকে থাকতে পারে সংবিধানের একপদকেন্দ্রিক ক্ষমতাকাঠামোর কারণে। তাই রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ডামি নির্বাচন করা এ মাফিয়াদের পতনের সঙ্গে সঙ্গে সংবিধান সংস্কারের জন্য লড়াই করছে।
ডিএসএ ভিকটিম নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক গোলাম মাহফুজ জোয়ার্দার বলেন, আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য যারা গুম-নির্যাতন-নীপিড়নের শিকার হচ্ছে তাদের দেশ থেকে পালাতে হচ্ছে। আর যারা এগুলো করছে তারা বহাল তবিয়তে আছে। গুম-খুন, নির্যাতন-নীপড়ন মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
সংগঠনের জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য জাকিয়া শিশিরের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন ২০১৯ সালে গুমের শিকার ইসমাইল হোসেন বাতেনের পরিবারের সদস্য ছোট ভাই খাইরুল আলম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির দপ্তর সমন্বয়ক নাঈমুল নয়ন, জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আব্দুল জলিল, ঢাকা জেলার সমন্বয়ক শাহাবুদ্দিন কবিরাজ লিটন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের দপ্তর সমন্বয়ক সারোয়ার আলম ও এহসান আহমেদ, ঢাকা মহানগর উত্তরের দপ্তর সমন্বয়ক জাহিদ রশিদ রানা ও মো. আজিজ, রাষ্ট্র সংস্কার যুব আন্দোলনের সমন্বয়ক মাশকুর রাতুল ও উম্মে হাবিবা মায়া।