ধানের দরপতন নিয়ন্ত্রণে আনতে চাল আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর পরও রাজধানীর বাজারগুলোতে চালের দাম কমেছে; এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার কমবেশি স্থিতিশীল রয়েছে।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে অন্তত ৩ টাকা করে কমেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবেও একই চিত্র দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধানের বাম্পার ফলনের মধ্যে দাম কমে যাওয়ার কারণে চালের বাজারে এমনই প্রভাব পড়েছে যে, শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর উল্টো চালের দাম কমেছে। স্বাধারণত শুল্ক-কর আরোপের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যায়।
টিসিবির হিসাবে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৩ টাকা থেকে ৪ টাকা করে কমেছে। সরু চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৪৮ টাকা ৫৬ টাকার মধ্যে যা এক সপ্তাহ আগেও ৫২ টাকা থেকে ৬৪ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এক বছর আগের তুলনায় সরু চালের দাম কমেছে ১৬ শতাংশ।
একইভাবে স্বর্ণা চাল কেজিতে দুই টাকা কমে ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকায়, পাইজাম কেজিতে অন্তত চার টাকা কমে ৪৮ টাকা থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা থেকে ৫৬ টাকা, কেজিতে কমেছে অন্তত চার টাকা।
মিরপুর ৬ নম্বর বাজারের জননী রাইস এজেন্সির স্বত্তাধিকারী মহিউদ্দিন হারুন বলেন, এই মওসুমে ধানের বাম্পার ফলন, নতুন মওসুমে ধানের দাম কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে এবার চালের বাজারও অনেক কমে গেছে। বিশেষ করে নতুন চালের দাম অনেক কম।
চালের বর্তমান বাজারদর তুলে ধরে তিনি বলেন, কুষ্টিয়া অঞ্চলের মিনিকেটের ৫০ কেজির বস্তা এখন দুই হাজার ১০০ টাকা। নওগাঁ অঞ্চলের মিনিকেটের দাম আরও একশ টাকা কম। একমাস আগেও এই চাল তারা দুই হাজার ৩৫০ টাকা করে বিক্রি করতেন। একইভাবে বিআর আটাশ চালের বস্তা একহাজার ৮০০ টাকা থেকে কমে গিয়ে এক হাজার ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইজাম ও গুটি স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩০০ টাকা থেকে এক হাজার ৪০০ টাকার মধ্যে।
চলতি মওসুমে গত ২৫ এপ্রিল থেকে সরকার ৩৬ টাকা কেজি দরে চাল এবং ২৬ টাকা কেজি দরে ধান সংগ্রহের ঘোষণা দিয়েছে। অগাস্ট পর্যন্ত মোট ১০ লাখ টন-ধান চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
সরকার ধানের দর এক হাজার ৪০ টাকা নির্ধারণ করলেও কৃষকরা ধানের দামে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ায় সরকার চাল আমদানিতে মোট করভার দ্বিগুণ করে ৫৫ শতাংশে উন্নীত করেছে।
শুক্রবার রাজধানীর হাতিরপুল ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, পটল, ঝিঙা, ঢেঁড়শ, টমেটো প্রতিকেজি ৩০ টাকা, ছোট আকারের লাউ ৪০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, গাজার ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কেবল বেগুন বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৬০ টাকায়।
হাতিরপুলের মুদি দোকানি মাসুদ বলেন, রোজা শুরুর পর থেকে ডাল, মসলা, চিনি, রান্নার তেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। সেই হিসাবে বলতে গেলে এবারের রোজার মওসুম অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো।
হাতিপুল কাঁচাবাজারে ও কারওয়ান বাজারের ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৫০ টাকা, ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ৯০ টাকা, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে সিটি করপোরেশন নির্ধারিত মূল্যে, প্রতিকেজি ৫২৫ টাকা।