শেখ হাসিনার সঙ্গে ইউএই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক

Untitled-1-5c6ae08c9f4e9

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাকতুমের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। এতে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা বাড়াতে আমিরাতের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। সোমবার আবুধাবি ন্যাশনাল এপিবিশন সেন্টারে এ বৈঠক হয়। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেন। আবুধাবির প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে এ বৈঠক হয়।

এ সময় ১৯৭৪ সালে তোলা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাদশা শেখ মোহাম্মদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের একটি দুর্লভ ছবি ক্রাউন প্রিন্সকে উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ।

এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্থপতি, প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি ও আবুধাবির প্রয়াত শাসক সুলতান আল নাহিয়ানের স্ত্রী শেখ ফাতিমা বিনতে মুবারক আল কেতবির আমন্ত্রণে রাজপ্রাসাদে মধ্যাহ্নভোজে অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে রোববার সকালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে পৌঁছানোর পর দেশটির ন্যাশনাল এপিবিশন সেন্টারে আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও ক্রাউন প্রিন্সসহ আমিরাত সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিরা। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইত্তেহাদ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে জার্মানি থেকে আবুধাবিতে পৌঁছান। তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান।

প্রধানমন্ত্রীর আমিরাত সফর উপলক্ষে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। তাকে স্বাগত জানাতে রোববার ভোরে বিমানবন্দরে ভিড় করেন অনেক প্রবাসী। আরব আমিরাতের দুবাই, শারজাহ, আবুধাবি, আল আইনসহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতৃস্থানীয় প্রবাসীরা ছুটে আসেন।

এদিকে, বন্দর, শিল্প পার্ক, এলএনজি টার্মিনাল, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের ওপর সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে (ইউএই) চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। গত রোববার আবুধাবির সেন্ট রেগিস হোটেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এসব এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ও ইউএইতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান। পরে স্বাক্ষর অনুষ্ঠান সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। তিনি বলেন, দুবাই সরকার ও দেশটির পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশ বন্দর ও শিল্প পার্ক নির্মাণের বিষয়ে এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমিরাতের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এই সমঝোতা স্মারকগুলো স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের নতুন দুয়ার খুলে গেল।

এ ছাড়া  সোমবার বিকেলে আমিরাতের মন্ত্রী, বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আজকের বিকেলটাই কেটেছে বিনিয়োগ-সংক্রান্ত আলোচনা নিয়ে। বৈঠকে আমিরাতের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী সুলতান বিন সাইদ আল মনসুরি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বাংলাদেশ ও ইউএইর মধ্যে যৌথ ব্যবসা ফোরাম ও যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন করার বিষয়েও আলোচনা হয়।

এ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহেমদ, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলবার দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

Pin It