প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন নয়া দিল্লি সফরে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
এছাড়া শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সে তিনটি যৌথ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন বলেও জানিয়েছে তারা।
তবে দুই দেশের মধ্যে কী কী চুক্তি হবে, তা স্পষ্ট করেনি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর নিয়ে বুধবার সাংবাদিকদের জানাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে ৩ থেকে ৬ অক্টোবর ভারতে রাষ্ট্রীয় সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভারত ও বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর এটাই শেখ হাসিনার প্রথম নয়া দিল্লি সফর হচ্ছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সফরে ভারতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি ৫ অক্টোবর নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা।
তাছাড়া আগামী ৩-৪ অক্টোবর ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম আয়োজিত ইন্ডিয়ান ইকোনোমিক সামিটে ‘প্রধান অতিথি’ থাকবেন তিনি।
ভারত ও বাংলাদেশ বর্তমানে ‘সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক’ পার করছে বলে অনেকে মনে করেন। গত ১০ বছরে দুই দেশের মধ্যে শতাধিক চুক্তি হয়েছে, যার ৬৮টিই হয়েছে গত তিন বছরে।
কয়েক দশকের স্থল সীমান্ত বিরোধের নিষ্পত্তি হয়েছে, সমুদ্র সীমা নিয়েও বিরোধ কেটে গেছে দুই দেশের। তবে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
এছাড়া আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জিও অনেক বাংলাদেশির মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের আশঙ্কা, ওই তালিকায় বাদ পড়াদের জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।
তবে ভারত সরকার বলছে, এটা তাদের ‘অভ্যন্তরীণ’ সমস্যা এবং বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়বে না। সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক সফরেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
নয়া দিল্লিতে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকটসহ যাবতীয় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন।
উর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, সংস্কৃতি বিনিময়, কারিগরি সহযোগিতা এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে ১৫টির বেশি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
উল্লেখযোগ্য চুক্তিগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বাধা দূর করতে একটি ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়ন নিয়ে দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হবে।
অন্যগুলোর মধ্যে দুই দেশের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, মান নির্ধারক সংস্থা, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়, চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। এছাড়া ঊপকূলীয় নজরদারি, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে ভারতীয় পণ্য ওঠা-নামার প্রক্রিয়া, ত্রাণ কার্যক্রম, ঢাকায় ভারতের এক্সিম ব্যাংকের স্থায়ী কার্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং তথ্য-প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা ও সাংস্কৃতিক বিনিময় নিয়ে চুক্তি হতে পারে।