প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ শুক্রবার। ১৯৮১ সালের ১৭ মে প্রায় ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফেরেন তিনি। এ বছর দিবসটির ৩৮ বছর পূর্তিতে দেশজুড়ে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার সময় বিদেশে অবস্থানের কারণে তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান। জাতির ইতিহাসের এ বিষাদময় ঘটনার সময় স্বামী পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার কর্মসূত্রে স্বামী ও বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন শেখ হাসিনা। পরে দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে ভারত হয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন তিনি।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন দল ও সংগঠন আজ সকালে ধানমণ্ডির বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, শোভাযাত্রা, বিভিন্ন এতিমখানায় খাবার বিতরণ, শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং আলোচনা সভার আয়োজন করবে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাবেন। বিকেল ৩টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা করবে আওয়ামী লীগ।
এ ছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচির আয়োজন করবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করার জন্য দল ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মী-সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী এবং সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
দেশে ফেরার আগেই ১৯৮১ সালের ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে সর্বসম্মতিক্রমে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত করা হয়। দেশে ফিরে দলের পুনর্গঠনে নানা উদ্যোগ নেন তিনি। এতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী-সমর্থকদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা দেখা দেয়।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রায় এক দশক স্বৈরাচারবিরোধী দুর্বার গণআন্দোলন করে। এতে ১৯৯০ সালে স্বৈরশাসক এরশাদের পতন হয়। মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়সহ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে কয়েকবার গৃহবন্দি হয়েছেন শেখ হাসিনা। ওয়ান ইলেভেনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গ্রেফতার হয়ে প্রায় ১১ মাস বিশেষ কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি।
তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এ পর্যন্ত চার মেয়াদে ক্ষমতাসীন হয়েছে। প্রথমবার ১৯৯৬ সালে, দ্বিতীয়বার ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের ঐতিহাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ মহাজোট চার-তৃতীয়াংশ আসনে বিশাল বিজয়ী হয়ে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠন করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিশাল বিজয় নিয়ে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। সর্বশেষ গত বছরের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও ভূমিধস জয়ের পর ৭ জানুয়ারি সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন আওয়ামী লীগ সভাপতি।