শ্রীলংকাকে ৩০২ রানে হারিয়ে সবার আগে সেমিতে ভারত

image-735722-1698940999

কাকতালীয়! ভারতের ইনিংসের প্রথম বলে রোহিত শর্মা চার মারার পর দ্বিতীয় বলে বোল্ড। শ্রীলংকার ইনিংসের প্রথম বলে পাথুম নিশাঙ্কা এলবিডব্ল–। রোহিতের ঘাতক মাদুশাঙ্কা। নিশাঙ্কার শিকারি বুমরা।

বৃহস্পতিবারের ওয়াংখেড়েতে দুদলের শুরুর মিলটুকু ছাড়া আর সবকিছুতেই অমিল। ভারতের ইনিংসে ছুটল রানের ফোয়ারা। শ্রীলংকার ইনিংসে উইকেট-বৃষ্টি। এ বছর সপ্তমবার ৩৫০-এর বেশি রান মজুদ করল ভারত তিন তিনটি সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে।

আর শ্রীলংকা তিন রানে চার এবং ১৪ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে এশিয়া কাপ ফাইনালের দুঃস্বপ্ন ফিরিয়ে আনল। কলম্বোয় ৫০ রানে অলআউট হয়ে ১০ উইকেটে ভারতের কাছে হেরেছিল শ্রীলংকা। মুম্বাইয়ে মেন্ডিসরা মুখ থুবড়ে পড়লেন ৫৫ রানে। ৩০২ রানের রেকর্ডরাঙা জয়ে সবার আগে ভারত পৌঁছে গেল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে।

প্রথম সাত ম্যাচের সাতটিই জিতল স্বাগতিকরা। বিশ্বকাপে রানের হিসাবে এটি দ্বিতীয় বড় জয়। সব মিলিয়ে ওয়ানডেতে এরচেয়ে বড় জয় আছে মাত্র তিনটি। বিপরীতে শ্রীলংকার ৫৫ রান বিশ্বকাপে তাদের সর্বনিম্ন স্কোর। বিশ্বকাপে এরচেয়ে কম রানে অলআউট হয়েছে শুধু কানাডা ও নামিবিয়া।

মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজের যুগল তাণ্ডবে ২৯ রানে আট উইকেট হারিয়ে কানাডার ৩৬ রানে অলআউট হওয়ার বিব্রতকর রেকর্ডকেও হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিল লংকানরা। মহেশ তিকশানা (১২) ও কাসুন রাজিতার (১৪) ব্যাটে সেই লজ্জা এড়াতে পারলেও ১৯.৪ ওভারেই গুটিয়ে যায় সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

শামি ১৮ রানে পাঁচটি ও সিরাজ ১৬ রানে নেন তিন উইকেট। এবারের আসরে মাত্র তিন ম্যাচ খেলেই ১৪ উইকেট হয়ে গেল শামির। সবমিলিয়ে ১৪ ম্যাচে ৪৫ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপে ভারতের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি এখন শামি। বিশ্বকাপে মিচেল স্টার্কের সর্বোচ্চ তিনবার পাঁচ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডও ছুঁয়েছেন ভারতের এই অভিজ্ঞ পেসার।

২০১১ সালের ২ এপ্রিল এ মাঠেই মুত্তিয়াহ মুরালিধরনের শ্রীলংকাকে ছয় উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জিতেছিল শচীন টেন্ডুলকারের ভারত। উত্তরসূরিদের লড়াই দেখতে কালও মাঠে ছিলেন দুই কিংবদন্তি। শচীন ফিরেছেন আরেকটি সুখস্মৃতি নিয়ে, মুরালির সঙ্গী নতুন দুঃস্বপ্ন।

শামি-সিরাজদের তাণ্ডবের আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আট উইকেটে ৩৫৭ রানের পাহাড় গড়ে ভারত। যা বিশ্বকাপে সেঞ্চুরিবিহীন সর্বোচ্চ ইনিংস। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও শুবমান গিল ৯২, বিরাট কোহলি ৮৮, ও শ্রেয়াস আয়ার ৮২ রানে আউট হন। তিনজনকেই ফেরান ৮০ রানে পাঁচ উইকেট নেওয়া মাদুশাঙ্কা।

শচীনের ৪৯ সেঞ্চুরির রেকর্ড ছোঁয়ার অপেক্ষা বাড়লেও কোহলি কাল গড়েছেন এক পঞ্জিকাবর্ষে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি আটবার এক হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়ার রেকর্ড। এর আগে সর্বোচ্চ সাতবার এই কীর্তি ছিল শচীনের। প্রথম ওভারে রোহিতের বিদায়ের পর জীবন পেয়ে ১৮৯ রানের জুটি গড়েন গিল ও কোহলি।

মাত্র আট রানের জন্য বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি মিস করেন গিল। তিন রানের ব্যবধানে একই আক্ষেপে পোড়েন কোহলি। এর পর শ্রেয়াসের ৫৬ বলে ৮২ রানের টর্নেডো ইনিংসে সাড়ে তিনশ ছাড়িয়ে যায় ভারতের স্কোর।

Pin It