শ্রীলংকায় ইস্টার সানডের দিন রোববার সকালে গির্জা, ফাইভস্টার হোটেলসহ কয়েকটি স্থানে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় নিহতদের সংখ্যা বেড়ে ৩২১ জনে দাঁড়িয়েছে বলে দেশটির পুলিশ জানিয়েছে।
কলম্বো পুলিশের মুখপাত্র রাবন গুসাসেকারা মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানান, আহত পাঁচ শতাধিক মানুষের মধ্যে বেশ কয়েকজন হাসপাতালে মারা গেছেন।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশের একজন মুখপাত্র জানান। খবর বিবিসি, রয়টার্সের।
এদিকে দেশটিতে মঙ্গলবার শোক দিবস পালনের মধ্যেই হামলায় নিহতদের গণঅন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন করা হয়েছে। কলম্বোর উত্তরে নেগম্বোতে অবস্থিত সেন্ট সেবাস্তিয়ান গির্জায় এ গণঅন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সম্পন্ন হচ্ছে। রোববারের হামলার শিকার গির্জাগুলোর মধ্যে সেন্ট সেবাস্তিয়ান একটি।
এর আগে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তিন মিনিটের নীরবতা পালন করেছে দেশটির জনগণ। নমিন রাখা হয় দেশটির জাতীয় পতাকা। এ সময় শ্রীলঙ্কাবাসী মাথা নুইয়ে শ্রদ্ধা জানান।
গত রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কলম্বোর সেন্ট অ্যান্থনি শ্রিনে প্রথম বোমা হামলায় হয় বলে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ওই সময়কেই বেছে নেয় দেশটি।
এদিকে মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কায় জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করায় দেশটির সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। পানীয়ের দোকানগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রেডিও ও টিভি চ্যানেলগুলোতে বাজানো হয়েছে বেদনার সুর।
সকালে কলম্বোর সেন্ট অ্যান্থনি শ্রিনে মোমবাতি হাতে জড়ো হন বহু মানুষ। এ সময় তারা চোখ বুজে বুকের ওপর দুহাত রেখে নীরবে প্রার্থনা করেন।
রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানী কলম্বো ও তার আশপাশে গির্জা ও হোটেলে সব মিলিয়ে আটটি বিস্ফোরণে ২৯০ জনের মৃত্যু হয়। এসব হামলায় ৫শ’র বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
ইস্টার সানডে উপলক্ষে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা রোববার সকালে প্রার্থনা করার সময় কলম্বোসহ দেশটির তিনটি গির্জায় একযোগে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। প্রায় একই সময় কলম্বোর তিনটি পাঁচ তারকা হোটেল– শাংরি লা, সিনামন গ্র্যান্ড ও কিংসবুরিতেও বোমার বিস্ফোরণ হয়।
সকালে ছয়টি স্থাপনায় হামলার কয়েক ঘণ্টা পর দুপুরে কলম্বোর দক্ষিণাঞ্চলের দেহিওয়ালা এলাকায় একটি হোটেলে সপ্তম বিস্ফোরণটি ঘটে। এরপর কলম্বোর উত্তরে ওরুগোদাওয়াত্তা এলাকায় আরেকটি বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়।
এদিকে এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে জামায়াত আল-তাওহীদ আল-ওয়াতানিয়া নামের একটি গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম তাস।
তাস-এর ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার আল আরাবিয়া টিভি চ্যানেল এক টুইট বার্তায় এ কথা জানায়। তবে জামায়াত আল তৌহিদ আল ওয়াতানিয়া নামের ওই গোষ্ঠী সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়টি চ্যানেলটি।