আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস-২০২৪ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, নির্বাচন ব্যবস্থা, প্রশাসন কাঠামো ও বিচার ব্যবস্থার আমূল সংস্কার; গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতসহ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে পারলেই ‘রাষ্ট্রসংস্কার’ সম্ভব হবে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআইবি) ‘নতুন বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন : তরুণদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
টিআইবির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের সঞ্চালনায় সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, আরিফ সোহেল, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য আরিফুল ইসলাম আদীব বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া উপস্থাপক ও গণমাধ্যমকর্মী ফারাবি হাফিজ, তরুণ কথাসাহিত্যিক সাদাত হোসাইন, , গণমাধ্যমকর্মী ও রম্যলেখক শিমু নাসের আলোচনায় অংশ নেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের প্রতি আস্থা রাখুন। যারা ক্ষমতায় যান তাদের জনগণ বিশ্বাস করতে চান না, কারণ অতীতের অভিজ্ঞতা তাদের ভালো নয়। আমাদেরকেও তারা সন্দেহের চোখে দেখছেন। এক্ষেত্রে জনগণের দোষ নাই।’
মূল আলোচনায় আরিফ সোহেল বলেন, ‘আমরা মনে করি ২০২৪ এর আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিবাদের ভাষা তৈরি হয়েছে, যা ২০১৮ তে সম্ভব হয়নি। জনগণের ভাষায় আমরা কথা বলতে পেরেছি বলেই স্বৈরাচারকে সরিয়ে দিতে পেরেছি।’
সামান্তা শারমিন বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ তরুণদের মধ্যে অনেক আশা-আকাঙক্ষার জন্ম দিয়েছে। এই নতুন বাংলাদেশ বির্নিমাণে গণ-আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।’
আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘রাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো প্রতিটি নাগরিকের মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করা। সকলে যেন যথাযথভাবে বেঁচে থাকার অধিকার পায়। সামাজিক ন্যায় বিচার পায়। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কাজ হলো জনগণকে নিরাপত্তা দেয়া।’
সাদাত হোসাইন বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে টেকসই গণতন্ত্র প্রয়োজন। শুধুমাত্র নির্বাচন আয়োজনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র নিশ্চিত হয় না। তাই বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা ও শুভবোধকে সংহত করা ব্যতিরেকে গণতন্ত্র সংহত করা সম্ভব না।
শিমু নাসের বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে কারও কাজের সমালোচনার জন্য কাউকে যেন সরকারি বাহিনীর নিপীড়নের ভয় পেতে না হয়। গত ১০-১৫ বছরে রাজনৈতিক কার্টুন বিলুপ্ত করে শিল্পীদের বাকস্বাধীনতা খর্ব করেছে। আমরা যেন নির্ভয়ে সমালোচনা করতে পারি। আমি মনে করি নতুন বাংলাদেশের আইন ও শাসনকাঠামো সকলের কথা ভেবেই প্রণীত বা সংশোধিত হওয়া উচিত।’
ফারাবি হাফিজ বলেন, ‘মানুষের মধ্যে হতাশা দেখতে পাচ্ছি-অথচ রক্তের দাগ শুকায় নাই। তাই বলে আমরা রাজশাহীর ঘটনাও মেনে নিতে পারি না। ‘নতুন বাংলাদেশে’ এ জাতীয় প্রতিহিংসামূলক কর্মকা-ের কোনো সুযোগ নাই।’