আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন থেকে চলমান সঙ্কট উত্তরণে কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় জাতি হতাশ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “গণতন্ত্রহীন একটা অবস্থা, সংবিধানকে পুরোপুরি নসাৎ করে তাকে উপেক্ষা করা এবং একদলীয় একটা শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ কাজ করছে প্রায় এক দশক ধরে। আমরা তাদের সম্মেলনে দেখতে পেলাম সেই কথাগুলোই আবার সামনে এসেছে। ফলে জাতি সম্পূর্ণভাবে হতাশ হয়েছে।
“জাতির একটা প্রত্যাশা ছিল, হয়তবা গণতন্ত্র উত্তরণের একটা পথ দেখা যাবে। কিন্তু তাদের (আওয়ামী লীগ) সম্মেলনে সেই পথ তারা দেখাতে পারেনি। সেই সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন, রাজনৈতিক যে উন্নয়ন- তার কোনটার জন্য, সংকট উত্তরণের জন্য কোনো দিকনির্দেশনা দিতে তারা এই সম্মেলনে ব্যর্থ হয়েছে।”
শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হয় আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন শনিবার কাউন্সিল অধিবেশনে ঘোষিত হয় ক্ষমতাসীন দলের নতুন কমিটি, যেখানে শেখ হাসিনা সভাপতি এবং ওবাংদুল কাদের সাধারণ সম্পাদক পদে পুনর্নির্বাচিত হন।
আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে হতাশা প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, “এখানে ব্যক্তি ও দলের প্রশংসা, যেটাকে আমরা বলি বন্দনা- করা হয়েছে। কিন্তু জাতির যে সংঙ্কট সেই সঙ্কট উত্তরণের জন্য বেশি কিছু এই সম্মেলনে আসেনি।”
বিএনপির কাউন্সিল কবে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আপনারা জানেন, আমরা একটা প্রচণ্ড বৈরী ও প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে রাজনীতি করছি। আমাদের রাজনীতির স্পেস এখানে পাচ্ছি না। যার ফলে আমাদের স্বাভাবিক কার্য্ক্রম পরিচালনা করতে পারি না। বেশিরভাগ জায়গায় আমাদের কাউন্সিল করতে দেয়া হয় না। বিশেষ করে জেলা ও উপজেলাগুলোতে আমাদের কাউন্সিল করতে দেয়া হয় না।
“এর মধ্যেও আমরা কাজ করছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সংগঠনকে গুছিয়ে আনা হচ্ছে। আমরা যত দ্রুততর সময়ে এটা শেষ করব এবং এরমধ্যেই হয়তবা আমরা কাউন্সিল করতে চেষ্টা করব।”
রাজাকারের তালিকায় ভুলভ্রান্তির পেছনে বিএনপি-জামায়াত জড়িত রয়েছে বলে একজন মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল বলেন, “এসব হচ্ছে সব ব্যর্থতার দায় অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার পুরনো বিষয়, এটা নতুন না। এটা আওয়ামী লীগের চরিত্র। সেইভাবে সব সময় তাদের ব্যর্থতা, তাদের অপরাধ অন্যের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করে।”
দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদ্য প্রয়াত সদস্য জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান কবীর মুরাদের স্মরণে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ছাড়াও বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুল কুদ্দুস, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, উলামা দলের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, জিয়া পরিষদের এমতাজ হোসেন, শফিকুল ইসলাম, আবদুল কালাম আজাদসহ নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেন।