সঙ্গী যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মগ্ন

social-media

সঙ্গী বেছে নেওয়ার সময় ব্যক্তিগত জীবনে তার আচার ব্যবহার সম্পর্কে জানাটাও জরুরি। আর প্রযুক্তির কল্যাণে পাওয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পদচারণার মাত্রাও এখন বিবেচ্য বিষয়।

ইন্টারনেট-ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বর্তমান প্রজন্মের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যার ভালো-খারাপ দুই দিকই রয়েছে।

তাই ভবিষ্যত জীবনসঙ্গী এই মাধ্যমগুলোতে কেমন এবং কতটা সময় কাটায় তা জানা প্রয়োজন।

আর সঙ্গীর এই বিষয়ক ব্যাপারগুলো যদি পছন্দ না হয় তবে প্রয়োজন খোলামেলা আলোচনা।

তবে এই আলোচনা ডেকে আনতে পারে বিভিন্ন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি। তাই সম্পর্কবিষয়ক এক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে এমন পরিস্থিতি এড়ানোর কয়েকটি পন্থা এখানে দেওয়া হল।

বিশেষজ্ঞের মতামত

ভারতীয় মনোবিজ্ঞানী সোয়েতা সিং বলেন, “বেশিরভাগ ‘মিলেনিয়াল’ যুগল বা দম্পতি এই সমস্যা সম্মুখীন হন। আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর উপর এতটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি যে এগুলোর পেছনে কতটা সময় ব্যয় হচ্ছে সেদিকে খেয়াল রাখি না। ফলে, প্রিয়জনদের সঙ্গে মুখোমুখি কাটানো সময় কমে গিয়েছে। অপরদিকে তারা নিজেদের অবহেলিত মনে করছে। একটি সম্পর্কে ফাটল সৃষ্টি হওয়ার একটি বড় কারণ এই অনুভুতি।”

বের করতে হবে কী জন্য অস্বস্তি: প্রথমেই আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে নিজেকে অবহেলিত মনে হওয়ার কারণ কী? শুধুই সান্নিধ্যের অভাব, নাকি অন্য কোনো আশঙ্কাও মনে উঁকি দিচ্ছে? সঙ্গী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার প্রতি মনোযোগ দিচ্ছে না সেজন্য মন খারাপ? নাকি সে এমন কারোর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে যাকে আপনার পছন্দ না? নাকি এই মাধ্যমগুলো আপনার সঙ্গী নিজের যেসব দৃষ্টিভঙ্গী উন্মোচন করছে সেগুলোকে আপনি সমর্থন করেন না। যে কোনো সমস্যার সঠিক কারণ চিহ্নিত করাই হল প্রথম কাজ।

ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণের পর: সমস্যার কারণ উদ্ধার করার পর তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনার পালা। এখানে খেয়াল রাখতে হবে একজন মানুষের সঙ্গে আরেকজনের সম্পর্ক যতই গভীর হোক না কেনো কিছু ব্যক্তিগত বিষয় একান্তই ওই ব্যক্তির। তাই এই বিষয়ে আলোচনার শুরু করার এমনি একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে যাতে একজন ব্যক্তির মনে না হয় কেউ তার ব্যক্তিগত বিষয়ে বাগড়া দিচ্ছে।

সিদ্ধান্ত চাপানো যাবে না: এই ধরনের কথা বলার সময় মানুষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজের ধারণা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। অর্থাৎ এই ধরনের আলোচনায় ‘জাজমেন্টাল’ হওয়া যাবে না।

“তুমি সবসময় অন্য পুরুষ কিংবা নারীর প্রোফাইল দেখ কেনো?” কিংবা “আমার প্রতি তোমার আচরণ পাল্টে গেছে কারণ তুমি ফেইসবুকে আরও আকর্ষণীয় কারও সঙ্গে সময় কাটাচ্ছো।”

যে কোনো সমস্যা নিয়ে আলোচনার ভাষা এমন হওয়া উচিত নয়। বরং সঙ্গীকে বোঝান তার অতিরিক্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের কারণে আপনাদের সম্পর্কে কিরূপ ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে।

নজর রাখা: এই আলোচনায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সঙ্গীর ভুলটা তার সামনে উপস্থাপন করা। আর এজন্য তার ভুলগুলো কীভাবে চিহ্নিত করেছেন সে ব্যাখ্যা দিতে হবে।

সঙ্গীর অজান্তে তার উপর নজর রেখেছেন কিংবা অগোচরে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেছেন?

এমনটা করে থাকলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সঙ্গীর উপর নজর রাখার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে কখনই নিজেদের মধ্যকার বিশ্বাস ভঙ্গ না হয়।

কিছু নিয়ম চালু করুন: ইতিবাচক আলোচনার শেষে অবশ্যই কিছু নিয়ম বেঁধে নিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের নির্দিষ্ট সময় বেছে নিতে পারেন। এই সময়ের বাইরে আপনারা নিজেরকে সময় দেবেন। সঙ্গীর কোনো বিষয় যদি অপছন্দ হয় তবে সেটা তাকে সরাসরি বলতে হবে। আর মনে রাখতে হবে, এই নিয়মগুলো এক তরফা নয়, দুজনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

Pin It