আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ সচিবালয়ের চারপাশ ‘নীরব জোন’ বা ‘নো হর্ন জোন’ ঘোষণা করেছে সরকার। এর আওতাধীন এলাকা হচ্ছে- সচিবালয়ের সন্নিকটের জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড় ও সচিবালয় লিংক রোড। ওই এলাকায় চলাচলরত কোনো যানবাহন হর্ন বাজালেই জেল-জরিমানার শিকার হবে। এ লক্ষ্যে আগামী ১১ ডিসেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে লিফলেট বিতরণ করা হবে।
রোববার সচিবালয়ে পবিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে সচিবালয়কে ‘নীরব জোন’ এলাকা কার্যকর করতে এ-সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব বিল্লাল হোসেন এ তথ্য জানান। সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত সচিব বিল্লাল হোসেন বলেন, বিধিমালা অনুযায়ী ‘নীরব জোন’ এলাকায় হর্ন বাজালে প্রথমবার সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একই অপরাধ পরবর্তী সময়ে করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
তিনি বলেন, ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণার সময় থেকেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রচারণার জন্য টেলিভিশনে স্ক্রল, ফেসবুকে প্রচার, মোবাইল ফোনে মেসেজসহ লিফলেট বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আন্তঃমন্ত্রণালয়ের নেওয়া এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সব মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হবে, যাতে তাদের কর্মকর্তাদের গাড়ির চালকরা সচিবালয়ের আশপাশে হর্ন না বাজান। সচিবালয়ের ভেতরেও লিফলেট বিতরণ করা হবে। বাস চালকদের সচেতন করতে মতিঝিল, গুলিস্তান ও ফুলবাড়িয়া এলাকায় লিফলেট বিতরণ করা হবে।’
সভায় জানানো হয়, জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়, সচিবালয় লিংক রোড হয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকায় হর্ন বাজানো যাবে না। এসব এলাকায় ‘নীরব’ চিহ্নিত সাইনবোর্ড স্থাপন করা হবে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ নভেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় চলতি বছরের ১৭ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশ সচিবালয়ের চারপাশ ‘নীরব জোন’ হিসেবে কার্যকরের সিদ্ধান্ত হয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের অধীনে প্রণীত ‘শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬’ অনুযায়ী ‘নীরব এলাকা’ বলতে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত বা একই জাতীয় অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান এবং এর চারদিকে ১০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকাকে বোঝায়।
