বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই রায়ে ন্যায় ও ন্যায্যতা বিজয়ী হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তারেক রহমান।
রবিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘সত্যের সৌন্দর্য হলো, এটি অনিবার্যভাবে প্রচার এবং ষড়যন্ত্রের ওপর জয়লাভ করে। আমাদের বিশ্বাস দেয়, অবশেষে ন্যায় ও ন্যায্যতা বিজয়ী হয়। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অবসান ঘটাতে এবং ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করি, যেখানে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে কারও জীবন বা পরিবার ধ্বংস হবে না।’
তারেক রহমান আরও লেখেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের চেতনাকে সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যা বিশ্বাস এবং মতাদর্শের বৈচিত্র্যের ওপর ভর করে, বাংলাদেশের জনগণকে নির্বাচনী অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণের ক্ষমতা দেয়। সেই যাত্রায়, আমরা আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, প্রতিটি নাগরিকের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষা এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহনশীল এবং নিয়মভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষা করি।’
সত্যের সৌন্দর্য হলো ষড়যন্ত্রের ওপর জয়লাভ: তারেক রহমান
এর আগে রবিবার বেলা পৌনে ১২টায় বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় বাতিল করে দিয়েছেন উচ্চ আদালত। বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, ২১ আগস্ট কে গ্রেনেড সরবরাহ করেছে তা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেননি কোনো তদন্ত কর্মকর্তা। এছাড়া কে গ্রেনেড মেরেছে তাও বলেননি কোনো সাক্ষী।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। এতে ২৪ জন নিহত ও প্রায় ৩০০ জন আহত হন। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা ওই হামলায় অল্পের জন্য রক্ষা পান। এই ঘটনার পর মামলাগুলো দায়ের করা হয়।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) রায় দেন। রায়ে বিএনপির সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে আজ হাইকোর্ট জানায়, বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ এবং তা অবৈধ উপায়ে দেওয়া হয়েছে।