সমাজ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন কুষ্ঠ রোগীদেরকে স্বাভাবিক জীবন ও সমাজে ফিরিয়ে আনায় তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা একটি ভিজ্যুয়াল রিপোর্টে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পোস্টে দেখা যায় একজন কুষ্ঠ রোগী বলছেন, আমাদের দেশে কুষ্ঠরোগে আক্রান্তদের ঘৃণা করা হতো। আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও সমাজ ঘৃণা করতো। এরপর ঢাকা এসে কমলাপুর রেলস্টেশনের ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মে জায়গা নেই। একদিন শুনলাম আওয়ামী লীগ নেত্রী আসবেন। আমরা ভাবলাম, আমাদের বিষয়টি তার সঙ্গে দেখা করে জানালে হয়তো তিনি একটি উপায় বের করে দেবেন।
‘পরে আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে আমাদেরকে বসার জন্যে একটি মাদুর দেয়া হয়। এরপর তিনিও আমাদের পাশেই বসেন। আমাদের ১৮ জনকে যে খাবার দেয়া হয় তিনিও আমাদের সঙ্গেই খাবার খান। পরে আমরা আমাদের থাকার সমস্যার কথা তাকে জানাই। তিনি কথা দিয়েছিলেন যে- ক্ষমতায় আসলে আমাদের থাকার জায়গা করে দেবেন। এরপর ১৯৯৬ সালে তাঁর দল নির্বাচিত হলে তিনি আমাদের জন্যে আবাসন প্রকল্প করে দেন।
এরপর থেকেই তাদের জীবনে আমূল পরিবর্তন আসে উল্লেখ করে তারা বলেন, প্রথমে আমাদেরকে সেলাই ও মোমবাতি তৈরির প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। পরে সমাজকল্যাণ থেকে ঋণ দেয়। এছাড়া বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ এবং সন্তানদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। আমাদের সন্তানদের অনেকেই এখন বিএসসি ও ডিপ্লোমা শেষ করেছে।’
তারা আরও বলেন, আমরা যখন কুষ্ঠরোগে ভুগছিলাম তখন আমাদের জীবন ছিল না, সমাজ ছিল না। কেউ আমাদের যতœ নেয়নি, কেউ আমাদের ভালোবাসেনি। এখানে আসার পর আমরা আবার সমাজে যুক্ত হয়েছি।
পোস্টে দারিদ্র্য বিমোচনে শেখ হাসিনার মডেলের প্রশংসা করে সজীব ওয়াজেদ লিখেন, ‘ভূমিহীনদের স্বনির্ভর করে গড়ে তুলতে সব সময় নতুন নতুন উপায় বের করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।’
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার উদ্যোগে সরকার এ পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ ভূমিহীনকে একটি করে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে। আরও ১ লাখ পরিবারকে ঘর দেয়ার কাজ চলছে।
সজীব ওয়াজেদ বলেন, আবাসনের সঙ্গে সঙ্গে এসব প্রান্তিক জনগণের উপার্জনের জন্যেও উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এসব সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে এই পরিবারগুলো সমৃদ্ধ হচ্ছে।
সরকারি ভাতা ছাড়াও বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ও অসহায়দের বাড়িতে ভাতা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। ফলে তাদের সন্তানেরা কর্মজীবন থেকে ফিরে আসছে। বিনামূল্যে শিক্ষা ও উপবৃত্তি ছিন্নমূল শিশুদের স্কুলে ফিরতে সাহায্য করেছে।’
স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগই এখন সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সুফলভোগীদের সাক্ষাৎকার ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে বানানো ভিজ্যুয়াল রিপোর্টে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সুবিধাভোগীরা।
এতে ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের অন্যান্য সুবিধাভোগীরাও তাদের সমাজে যুক্ত হওয়ার পেছনে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসা করেন।