স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনেক সমালোচনা রয়েছে, তবে সমালোচনার থেকেও স্বাস্থ্যখাতের অর্জন অনেক বেশি বলে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বুধবার (৮ নভেম্বর) রাতে হোটেল রেডিসন ব্লুতে কালাজ্বর ও ফাইলেরিয়া নির্মূল উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, একটি জাতিকে যদি এগিয়ে যেতে হয়, তাহলে সেই জাতিকে সুস্থ থাকতে হবে। সুস্থ রাখার দায়িত্ব নিজের এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় তেমন কিছুই ছিল না। পর্যায়ক্রমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অনেক অর্জন হয়েছে। বড় অর্জন হলো, আমাদের স্বাস্থ্যসেবা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে একেবারে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বীকৃতি জাতিসংঘের কাছ থেকে পেয়েছি। জাতিসংঘ ‘শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ নামে কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বীকৃতি দিয়ে বলেছে, এটা মানুষের জন্য অনেক উপকারী, তাই অন্যান্য দেশও এটাকে অনুসরণ করতে পারে। এটা কিন্তু অনেক বড় একটা অর্জন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনেক সমালোচনা করে। আমি ১০ বছর ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কাজ করছি। সমালোচনা সহ্য করার অভ্যাস আমার হয়ে গেছে। কিন্তু সমালোচনা থেকে আমাদের অর্জন অনেক বেশি। আমরা খতিয়ে দেখি না- আমাদের অর্জন কতটুকু। আপনাদের সঙ্গে ১০ বছর কাজ করার সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত।
তিনি আরও বলেন, আমি যখন প্রথম প্রতিমন্ত্রী হয়ে দিল্লি গেলাম, পোলিওমুক্ত দেশের সার্টিফিকেট আমি গ্রহণ করেছি। পরে আরও যে তিনটি অর্জন, সেটাতেও আপনারাই কাজ করেছেন, ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ান, মন্ত্রণালয়সহ সব পর্যায়ের লোক কাজ করেছে, সুতরাং এ অর্জন তাদেরও। এরপর টিটেনাসমুক্ত বাংলাদেশের সার্টিফিকেটটি আমি গ্রহণ করেছি।
স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্জনের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, এবার যখন আমরা দিল্লিতে গেলাম, আমরা জানতাম না যে এতগুলো অর্জন আমরা একসঙ্গে পাব। এতগুলো সুখের খবর আমরা নিয়ে আসতে পারব। সেখানে গিয়ে আমরা জানতে পারলাম, বাংলাদেশ কিছু পুরস্কার পাবে, অন্য দেশও পাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭৬তম অধিবেশনে একমাত্র বাংলাদেশ দুটি অর্জন একসঙ্গে পেয়েছে, কালাজ্বর এবং ফাইলেরিয়া নির্মূলের সার্টিফিকেট।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে একটি মাত্র দেশ কালাজ্বর নির্মূল করতে পেরেছে, সেটি হচ্ছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ, যেটা নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি। গত ৫০ বছরে যেটা আমরা করতে পারিনি। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পদে সায়মা ওয়াজেদের মাধ্যমে নির্বাচনে জয় লাভ করেছি। এ জয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. বর্ধান জং রানা, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোদাচ্ছের আলী, বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরীসহ অনেকে।