সরকারের দুর্নীতির কারণেই করোনাভাইরাস সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিকালে উত্তরার বাসা থেকে অনলাইনে সিলেটে ‘এমএ হক স্বাস্থ্যসেবা’ কর্মসূচির উদ্বোধনের সময় তিনি বলেন, “সরকারের চরম অবহেলা, অবজ্ঞা, অজ্ঞানতা এবং তাদের যে একটাই লক্ষ্য- চুরি, সেই কারণেই আজকে করোনা পরিস্থিতি এই অবস্থায় দাঁড়িয়েছে, সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।”
হজ ক্যাম্পে আইসোলেশনে থাকা প্রবাসীদের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, “সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে বিদেশ থেকে যারা ফেরত আসছেন তাদের স্ক্রিনিং যে টেস্ট, সেই টেস্টে সবাই তারা করোনামুক্ত। অথচ বিবিসি বাংলা বিভাগের একজন সাংবাদিক তিনি সেই হজ ক্যাম্পে গিয়ে একজনকে জিজ্ঞাসা করেছেন, তিনি (যাত্রী) জবাবে বলেছেন যে, আমাদের কোনো স্ক্রিনিংই হয়নি।
“কতটা দায়িত্বহীন হতে পারে এই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, কতটা উদাসীন হতে পারে সরকার। এতো ঘটনার পরেও, হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করার পরে, লক্ষ লক্ষ লোক আক্রান্ত হওয়ার পরে যখন একেবারে জীবন-জীবিকা সব কিছু ওলোট-পালট হয়ে যাচ্ছে, সেই সময়েও তারা তাদের ন্যূনতম যে দায়িত্ব, সেটা পালন করছে না।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকার কোনো দরকার নেই। আমাদের নিজেদেরকেই চেষ্টা করতে হবে বাঁচার জন্য, আমাদের নিজেদের চেষ্টা করতে হবে যেন এটা না ছড়ায়, এই সংক্রমণ যেন না বাড়ে।”
রিজেন্ট হাসপাতালে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া সার্টিফিকেট দেয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “রিজেন্ট হাসপাতালে কোনো পরীক্ষা না করেই করোনা টেস্টের রেজাল্ট দিচ্ছে। এটা তো একদিকে জীবনের প্রশ্ন, মারাত্মকভাবে স্বাস্থ্যের সমস্যা। অন্যদিকে যে পরিণতি …আজকে সমস্ত বিশ্বে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে, এটা অলরেডি গ্লোবাল মিডিয়াতে চলে গেছে। এখন বাংলাদেশ থেকে কোনো মানুষ বিদেশে আর যেতে পারবেন না। সব এয়ারলাইন্সগুলো বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এটার বড় রকমের একটা এডভান্স ইম্পেক্ট ইকোনমিতেও পড়বে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। মাত্র ছয় মাস সাজা স্থগিত করে তাকে বাসায় রাখা হয়েছে।
“সেখানে তাকে বলা হয়েছে যে, তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন না। অথচ তার চিকিৎসাটাই এখন বিদেশে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।”
দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের উদ্যোগে সদ্য প্রয়াত এমএ হকের স্মরণে ‘এমএ হক স্বাস্থ্য সেবা’র এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
সিলেট জেলা সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের শামীমুর রহমানের সভাপতিত্বে ও মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কয়েস লোদীর পরিচালনায় ভার্চুয়াল এই আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয় নেতা সাখাওয়াত হাসান জীবন, কলিম উদ্দিন মিলন, আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মহানগর সভাপতি নাসিম হোসাইন, জেলা সভাপতি আলী আহমদ, প্রয়াত এমএ হকের ছেলে রিয়াসাদ আজিম হকসহ সিলেট মহানগরের নেতারা বক্তব্য রাখেন।