সড়কে শৃঙ্খলা আনতে ওবায়দুল কাদেরের তৎপরতা ‘ফটোসেশনেই সীমাবদ্ধ’ অভিযোগ করে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনিই ‘সর্বকালের সবচেয়ে ব্যর্থ’ সড়ক পরিবহন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “দুঃশাসনের কবলে পড়ে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে দেশের সড়ক ব্যবস্থা। রাজধানীতে একদিকে তীব্র ট্রাফিক জ্যাম, অন্যদিকে পরিবহন নৈরাজ্যে অতিষ্ঠ জনসাধারণ।
“নিরাপদ সড়কের দাবিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় সরকার লোকদেখানো কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন, সেগুলো এখন প্রহসন বলে মানুষজন মনে করছে। আসলে কোনো পদক্ষেপই তারা গ্রহণ করেননি।”
গত বছর ২৯ জুলাই বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজপথে নামে শিক্ষার্থীরা, যাতে অচল হয়ে পড়ে ঢাকা। কয়েক দিন বিক্ষোভের পর শিক্ষার্থীদের দেওয়া নয়টি দাবি মেনে নিয়ে তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেয় সরকার। এরপরেও সড়কে ট্রাফিক আইন লংঘন ও দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে চলেছে।
সড়ক দুর্ঘটনার খবরে উদ্বেগ জানিয়ে রিজভী বলেন, “প্রতিদিন সড়কে লাশের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায়, সড়কে মৃত্যুর মিছিল। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের প্রাণ অকালে ঝরে পড়ছে সড়কে। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে নিহত হচ্ছে প্রায় ২০ জন মানুষ।”
সড়কমন্ত্রীর ‘ব্যর্থতায়’ এটা ঘটছে বলে দাবি করেন এই বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, “অথচ প্রতিদিন দেখছি সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব সারা দেশে ছুটাছুটি করছেন। তিনি যত ছুটাছুটি করছেন তার মুখ দিয়ে কথাবার্তা আরও বেশি দ্রুত গতিতে ছুটাছুটি করছে। তার দৌড়াদৌড়ি কেবল ফটোসেশনেই সীমাবদ্ধ।”
ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে রিজভী বলেন, “তিনি গণপরিবহনে নৈরাজ্য ও অকালে হাজার হাজার প্রাণ ঝরে যাওয়া রোধে যে ব্যর্থতা, তার জবাব দেবেন কি?”
এরপরেই তার পদত্যাগ দাবি করেন এই বিএনপি নেতা: “ওবায়দুল কাদের সর্বকালের সবচেয়ে ব্যর্থ একজন সড়কমন্ত্রী। যেহেতু মন্ত্রণালয় চালাতে তিনি ব্যর্থ, তার নেতৃত্বের কারণে সড়কে শুধু লাশের ছবি, সেহেতু এই মুহূর্তে পদত্যাগ করে তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য নজমুল হক নান্নু, অধ্যাপিকা সাহিদা রফিক, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।