দারুণ এক সেঞ্চুরির পর বোলিংয়েও অবদান রাখলেন সাইফ হাসান। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেন অন্য বোলাররাও। সবার মিলিত অবদানে তৃতীয় ও শেষ আনঅফিসিয়াল ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলকে সহজেই হারিয়ে সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল।
সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচে ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৯৮ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। ৩২২ রান তাড়ায় ২৪.৪ ওভারে শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেটে ১৩০ রান করার পর আলোকস্বল্পতায় আর খেলা সম্ভব হয়নি। ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে জয়ের জন্য তখন স্বাগতিকদের দরকার ছিল ২২৯ রান।
প্রথম ম্যাচে বড় ব্যবধানে হারা বাংলাদেশ পরের দুটিতে জিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ ঘরে তুলল।
কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শনিবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সাইফ ও মোহাম্মদ নাঈম শেখের ব্যাটে শুরুটা ভালো করে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে ঝড় তোলা নাঈম এবারও শুরু থেকে চড়াও হন বোলারদের ওপর।
একটু অদ্ভূতভাবেই ভাঙে ১২০ রানের শুরুর জুটি। ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ এর দায়ে ফিরে যান নাঈম। ৭৬ বলে দুই ছক্কা ও ৫ চারে ৬৬ রান করেন তিনি। এই আউটের সিদ্ধান্তে উত্তাপ ছড়ায় মাঠে। খেলা বন্ধ থাকে পাঁচ মিনিট।
সুযোগ কাজে লাগাতে আবারও ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্ত ও এনামুল হক। চতুর্থ উইকেটে সাইফকে সঙ্গ দেন মোহাম্মদ মিঠুন। ৯৯ রানের জুটিতে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পর বেশি দূর যেতে পারেননি সাইফ। ১১০ বলে ১২ চার ও তিন ছক্কায় ফিরেন ১১৭ রান করে।
এক চার ও দুই ছক্কায় ৩৫ বলে ৩২ রানে থামেন অধিনায়ক মিঠুন। এরপর আর তেমন কোনো জুটি গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। মঞ্চ প্রস্তুত ছিল আফিফ হোসেন, আরিফুল হক, নুরুল হাসান সোহানদের জন্য। প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি তারা। তারপরও সবার ছোট-ছোট অবদানে তিনশ ছাড়ায় বাংলাদেশের সংগ্রহ।
শ্রীলঙ্কার শিরান ফার্নান্দো ৪ উইকেট নেন ৫০ রানে। বিশ্ব ফার্নান্দো ৬৯ রানে তিনটি।
রান তাড়ায় শুরুতেই চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। পাথুম নিসানকাকে দ্বিতীয় ওভারে ফিরিয়ে দেন আফিফ। আরেক ওপেনার সান্দুন বিরাক্কডিকে বোল্ড করে বিদায় করেন বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার।
তৃতীয় উইকেটে কামিন্দু মেন্ডিস ও আশান প্রিয়াঞ্জনের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে শ্রীলঙ্কা। চারটি চারে ৩৪ রান করা প্রিয়াঞ্জনকে থামিয়ে ৬৪ রানের জুটি ভাঙেন সাইফ। পরে তুলে নেন প্রিয়মল পেরেরার উইকেট।
আশেন বান্দারাকে ফিরিয়ে শিকার শুরু করা ইবাদত হোসেন পরের ওভারে পান আরও বড় উইকেট। বিদায় করেন সিরিজ জুড়ে বাংলাদেশকে ভোগানো কামিন্দু মেন্ডিসকে। কামিন্দু তিন ছক্কা ও দুই চারে ৬৫ বলে করেন ৫৫। এর দুই বল পরেই আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়।
বাংলাদেশের সাইফ ও ইবাদত নেন দুটি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ‘এ’ দল: ৫০ ওভারে ৩২২/৯ (সাইফ ১১৭, নাঈম ৬৬, শান্ত ২, এনামুল ১৫, মিঠুন ৩২, আফিফ ১২, সোহান ১৭, আরিফুল ৬, আবু হায়দার ৮, সানজামুল ১২*, ইবাদত ৩*; বিশ্ব ১০-০-৬৯-৩, শিরান ১০-০-৫০-৪, মেন্ডিস ৭-০-৪৪-০, করুনারত্নে ৮-০-৬১-০, প্রিয়াঞ্জন ৬-০-২৯-০, আপন্সো ৯-০-৬১-১)
শ্রীলঙ্কা: (লক্ষ্য ২৪.৪ ওভারে ২২৯) ২৪.৪ ওভারে ১৩০/৬ (নিসানকা ৬, বিরাক্কডি ১৮, কামিন্দু ৫৫, প্রিয়াঞ্জন ৩৪, পেরেরা ৭, বান্দারা ৬, করুনারত্নে ১*, রমেশ ১*; আবু হায়দার ৫-০-২৮-১, আফিফ ৬-০-৩৬-১, ইবাদত ৪.৪-০-২৬-২, সাইফ ৬-০-২৫-২, সানজামুল ৩-০-১৫-০)
ফল: ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ৯৮ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়ী বাংলাদেশ