বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমিও নির্বাচিত হয়েছি। তারপরও সাক্ষ্য দিচ্ছি- ওই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এমনকি পরবর্তীকালে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেনি দেশের মানুষ।
শনিবার নগরীর অশ্বিনী কুমার হলে ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে মেনন বলেন, আপনি-আমি মিলে ভোটের জন্য রাজপথে লড়াই করেছি, আজিজ কমিশনকে ঘেরাও করেছি। আমরা এক কোটি ১০ লাখ ভুয়া ভোটার তালিকা ছিঁড়ে ফেলে নির্বাচন বর্জন করেছি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরও। কিন্তু এখন দেশে ভোটের অধিকার নেই। আজকে কেন ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ এবং জাতীয় নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারছে না?
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে উন্নয়ন করছেন, তা থেকে কাঙ্ক্ষিত সুফল আসবে না। ১৪ দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির এই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, উন্নয়ন মানে গণতন্ত্র হরণ নয়। উন্নয়ন মানে ভিন্নমতের সংকোচন নয়। উন্নয়ন মানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ নয়। উন্নয়ন মানে গণতন্ত্রের স্পেস কমিয়ে দেওয়া নয়।
তিনি বলেন, দেশে উন্নয়নের পাশাপাশি দুর্নীতি মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। সরকার একদিকে উন্নয়ন করছে, অন্যদিকে সরকারদলীয় লোকজন দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করছে। দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে ধামাচাপা পড়ছে সরকারের উন্নয়ন। সাধারণ মানুষ সুফল পাচ্ছে না এ উন্নয়নের।
মেনন বলেন, আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীরা ক্যাসিনো ব্যবসা করে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে। বিদেশে বাড়ি-গাড়ি করে সেকেন্ড হোম বানিয়েছে। আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে অবৈধভাবে অর্থ-বিত্তের মালিক বনে যাওয়া কথিত রাজনীতিকদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, ড. কামাল হোসেন বলেছিলেন- তিনি আর বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে থাকবেন না। অথচ আবারও ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ড. কামাল জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। ড. কামালের আন্দোলনে দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত খালেদা জিয়ার মুক্তি আসবে না। কারণ, কামাল হোসেন আন্দোলনের ডাক দিয়ে বিদেশে চলে যান।
বরিশালের উন্নয়ন স্থবির হয়ে আছে- অভিযোগ করে মেনন বলেন, উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাবে উন্নয়নে পিছিয়ে পড়ছে বরিশাল। উপাচার্য না থাকায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করতে হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বরিশালের জনকল্যাণমুখী উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দের দাবি জানান।
বরিশাল জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি নজরুল ইসলাম নিলুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, জেলা সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. টিপু সুলতান, কমরেড শান্তি দাস, অধ্যাপক বিশ্বজিৎ রাড়ৈ, ফাইজুল হক, জাকির হোসেন প্রমুখ।
সম্মেলন শেষে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা নগরীতে লাল পতাকা মিছিল বের করে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এর আগে বেলা ১১টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়।
মতামত ঃ চোরের মুখৈ রামনাম ।