সাজিদ ওয়াশিং প্লান্টসহ ১৩১টি স্থাপনা উচ্ছেদ

sess-5e024d2e1fc03

ঢাকার অদূরে টঙ্গীর নিশাতনগরে হা-মীম গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সাজিদ ওয়াশিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেডের কিছু অংশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছোট-বড় ১৩১টি স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

তুরাগ নদের তীর অবৈধভাবে দখল-দূষণের অভিযোগে বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক (ঢাকা নদীবন্দর) এ কে এম আরিফ উদ্দিন ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুর রহমান হাকিমের নেতৃত্বে মঙ্গলবার এ অভিযান চালানো হয়েছে।

এ নিয়ে পাঁচ দিনের অভিযানে ৯২৭টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে পুনর্দখল হওয়া সাড়ে ২১ একর জায়গা।

মঙ্গলবার সরেজমিনে নিশাতনগরে গিয়ে দেখা যায়, বুলডোজার দিয়ে সাজিদ ওয়াশিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেডের কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হচ্ছে। বিকেল ৫টার দিকে হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছিল- ‘আজকের মতো ভাঙার কার্যক্রম বন্ধ।’ এরপরও বুলডোজারের চালক কয়েক মিনিট ধরে স্থাপনা ভাংচুর করে যাচ্ছিলেন। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিনা নোটিশে প্রতিষ্ঠানটির কিছু অংশ ভেঙে ফেলায় শত শত কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

হা-মীম গ্রুপের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান জানান, সাজিদ ওয়াশিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেড যাতে ভাঙা অথবা বেদখল করা না হয় সে ব্যাপারে আপিল বিভাগের স্থিতিবস্থা ছিল। সেই আদেশ অমান্য করে গতকাল সেখানে অভিযান চালানোয় আদালত অবমাননা হয়েছে। এছাড়া আপিল বিভাগের একটি সার্কুলার রয়েছে। সেখানে বলা হয়- যদি কোনো স্থিতাবস্থা উত্তীর্ণ হওয়ার আগে ওই আদেশ বর্ধিত করার আবেদন করা হয় তাহলে সংশ্নিষ্ট মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেই আবেদন আপনা-আপনি বর্ধিত হয়েছে বলে গণ্য হবে।

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুর রহমান হাকিম জানান, মঙ্গলবারের অভিযানে সাজিদ ওয়াশিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেড, আনন্দ গ্রুপ, ডোম-ইনোসহ ছোট-বড় বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা ঘিরে অভিযান চালানো হয়েছে। বর্জ্য ফেলে নদীর পানি দূষণ করায় পরিবেশ আইনে ডোম-ইনোর চার কর্মকর্তাকে ২ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। আনন্দ গ্রুপের একটি ভবনের কিছু ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তুরাগ নদের ১৫ ফুট জায়গা সাজিদ ওয়াশিংয়ের মধ্যে ছিল। ওই প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তাকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

সাজিদ ওয়াশিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার (মার্কেটিং অ্যান্ড প্রডাকশন কো-অর্ডিনেশন) হেলাল উদ্দিন বলেন, সাজিদ ওয়াশিং লিমিটেডের কিছু ভাঙা হবে এ ধরনের কোনো নোটিশ বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। মেশিনপত্র সরানোর কোনো সুযোগ না দিয়ে আকস্মিক অভিযান চালানো হয়।

বিআইডব্লিউটিএ জানায়, গতকাল তুরাগ নদের কামারপাড়া ব্রিজ থেকে ধউর ব্রিজ পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়। এ সময় ২টি দোতলা, ১৩টি একতলা ও ১৬টি আধাপাকা ভবন, ৯০টি টিনের ঘর এবং ১০টি সীমানা প্রাচীরসহ ১৩১টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ সময় ৩ একর তীরভূমি অবমুক্ত করা ছাড়াও উচ্ছেদকৃত মালপত্র নিলামে ৩৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। জরিমানা আদায় করা হয় ১০ লাখ টাকা।

ঢাকার পার্শ্ববর্তী নদ-নদী রক্ষায় চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি থেকে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও বালু নদীতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ। চার পর্বে ৫০ দিনের অভিযানে উদ্ধার করা হয় ১২১ একর জমি। সর্বশেষ গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে বিআইডব্লিউটিএ। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ভ্রাম্যমাণ আদালত এই অভিযানে সহযোগিতা করছে।

Pin It