ইস্টার সানডের দিন শ্রীলঙ্কায় গির্জা, পাঁচ তারকা হোটেলসহ অন্তত আট জায়গায় একযোগে বোমা হামলায় বহু মানুষ হতাহত হওয়ার পর শবে বরাত ঘিরে বাংলাদেশেও নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে।
বাড়তি সতকর্তা হিসেবে জেলায় জেলায় সতর্কতা, নজরদারি ও চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর।
পুলিশ সদরদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. সোহেল রানা রোববার দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শ্রীলংকায় বোমা হামলার ঘটনায় মত কোনো নাশকতার আশঙ্কা বাংলাদেশে আমরা করছি না। তবে ইস্টার সানডে ও শবে বরাত ঘিরে বাড়তি নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।”
কোনো রকম ‘অপ্রীতিকর ঘটনা’ যাতে না ঘটে সেজন্য ‘রুটিন কাজের অংশ হিসেবেই’ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
রোববার সকালে ইস্টার সানডের প্রার্থনা চলাকালে কলম্বো ও আশপাশের এলাকার তিনটি গির্জায় বিস্ফোরণ ঘটে। একই সময়ে বোমা হামলা হয় তিনটি পাঁচতারা হোটেলে।
এরপর দুপুরে একটি হোটেলসহ আরও দুটি জায়গায় বিস্ফোরণের খবর জানায় কলম্বো পুলিশ।
এসব হামলায় ১৩৮ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। তবে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
রোববার বিকালে কুমিল্লার চান্দিনা থানা কমপ্লেক্সের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী সজাগ রয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় বাংলাদেশের জনগণ সবসময় ধিক্কার দেয়। জনগণ এ ধরনের হিংসাত্মক ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে বিশ্বাস করে না ।”
শ্রীলঙ্কার ঘটনার পর রাজধানীর কূটনীতিক পাড়া গুলশান-বনানী এবং ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোর বাইরে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে রোববার।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কূটনৈতিক নিরাপত্তা বিভাগের উপ কমিশনার হায়াতুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ সবসময় সতর্ক। শ্রীলঙ্কার ঘটনার পর দূতাবাস ও হাই কমিশনগুলোতে বাড়তি কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে আমাদের কোনো হুমকি নেই, পুলিশ নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।”
ঢাকার ফার্মগেইট ও তেজগাঁও এলাকায় বেশ কয়েকটি গির্জা রয়েছে। কাকরাইল ও রমনা এলাকায় রয়েছে তিনটি গির্জা।
এসব গির্জাতেও বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার এবং রমনা বিভাগের উপ কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
বিশ্বের সব দেশের মত বাংলাদেশের খ্রিস্টানরাও রোববার ইস্টার সানডে বা যিশুর পুনরুত্থান দিবস পালন করছেন। আর রাতে মুসলমানরা পালন করবেন শবে বরাত। পাপ থেকে মুক্তি আর সৌভাগ্যের আশায় তারা রাত কাটাবেন ইবাদত বন্দেগিতে।
এই রাতটি ঘিরে প্রতিবারই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সোমবার ভোর ৬টা পর্যন্ত কোনো ধরনের বিস্ফোরকদ্রব্য, আতশবাজি, পটকা বা ক্ষতিকারক ও দূষণীয় দ্রব্য বহন বা ফোটানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
নগরবাসীকে এ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে অনুরোধ করা হয়েছে পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে।