বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান জন্মদিন ১৯ সেপ্টেম্বর। অকাল প্রয়াত এ নায়ক বেঁচে থাকলে তার বয়স হতো ৪৮। কেমন হতো তিনি যদি বেঁচে থাকতেন? বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের এ প্রজন্মের নায়িকা শবনম ইয়াসমিন বুবলি ।
সালমান শাহ’র ৪৮তম জন্মোৎসবে উপস্থিত ছিলেন। কেমন লাগলো দিনটা উদযাপন করে ?
সালমান শাহ এমন একটি নাম যার সম্পর্কে আসলে যাই বলি কম হয়ে যাবে। এত অল্প সময়ে তিনি এত মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছিলেন যে, একজন শিল্পীর জন্য এটা পরম পাওয়া। মৃত্যুর চব্বিশ বছর পরেও তাকে দর্শকরা যেভাবে মনে রেখেছে তার আসলে তুলনা হয়না। না থেকেও আছেন সবার মাঝে। শিল্পী হিসেবে তাকে নিয়ে যে কোন আয়োজনে যেকোন ভাবেই উপস্থিত থাকা অনেক বড় পাওয়া। তার জন্মদিনের আয়োজনে আমি গিয়েছি স্বেচ্ছায়। কেননা তিনি আমার অসম্ভব প্রিয় একজন নায়ক।
সালমান অভিনীত আপনার প্রিয় চলচ্চিত্র কোনগুলো?
আমাদের জেনারেশন তো আসলে তাকে পায়নি। ছোটবেলা থেকেই তার ছবি দেখে বড় হওয়া। ওনার প্রতিটি ছবিই এত জনপ্রিয়। আমার প্রিয় ছবিগুলো হলো, ‘তোমাকে চাই’, ‘জীবন সংসার’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’সহ বেশ কিছু ছবি।
আপনার দৃষ্টিতে নায়ক হিসেবে তার সেরা গুণগুলো..
আসলে একেকটা ছবিতে তিনি একেক স্টাইলে উপস্থিত হয়েছিলেন সবার সামনে। এ জন্য প্রত্যেকটা ছবিই দাগ কেটে গেছে সবার মনে। তার ছবির গানগুলো এখনও যখন দেখি, আসলে এত ভালোলাগার গানগুলো। তার স্টাইল সেগুলো আরও যুগ যুগ ধরে চলবে। তিনি ছিলেন একটি পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ।
আপনি তো এখন ইন্ডাস্ট্রির প্রভাবশালী নায়ক শাকিব খানের বিপরীতে কাজ করছেন। আপনার কি মনে হয়, সালমান শাহ বেঁচে থাকলে শাকিব খানের এ প্রভাব থাকতো?
আমার মনে হয় কারো সঙ্গে কারো তুলনা চলে না। রাজ্জাক আঙ্কেল যখন ছিলেন তখন একটা সময় ছিলো, বা জাফর ইকবাল স্যার যখন ছিলেন, সালমান শাহ যখন ছিলেন তারা আসলে প্রত্যেকেই তাদের জায়গাতেই আছেন। আর আমার মনে হয় উনি যদি বেঁচে থাকতেন, আমাদের খুবই দুর্ভাগ্য যে ওনাকে আমরা অল্পসময়ে হারিয়েছি, উনি বেঁচে থাকলে অনেক কিছুই হতো। অনেক ভালো ভালো মুভি হতো। কারন কি আসলে শাকিব খান তো দেশ সেরা নায়ক, উনি একা একজন মানুষ কিন্তু কাজ করে যাচ্ছেন। অনেকেই আছেন আরও। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রাখার যে ব্যাপারটা সেটা আসলে শাকিব খান করছেন। সেরকম যদি আরও কয়েকজন যদি থাকতেন, একসাথে যদি কাজগুলো হতো, যেটা বলিউডে দেখা যায়, তেমন করে যদি সুপারস্টার সালমান শাহ থাকতেন তাহলে আরও বাড়তি আনন্দ যোগ হতো।
আপনার কি মনে হয়, সালমান শাহর ঘাটতি শাকিব খান কিছুটা পূরণ করতে পারছে ?
অবশ্যই তাই, সালমান শাহ এসেছিলেন, মান্না ভাইও অল্প সময়েই হারিয়ে গেলেন। যারা খুব দাপটের সঙ্গে কাজ করে যান তাদের কাছে অনেক সময় আমরা প্রত্যাশা করি। অনেকদিন অনেক বছর কাজ করুক এমন চাই। কিন্তু তাদেরকে আমরা সেভাবে পাইনি। সে জায়গা শাকিব খান অনেকদিন কাজ করে যাচ্ছেন এটা নিশ্চয়ই একটা বড় পাওয়া।
খ্যাতির চূড়ায় গেলে নায়করা নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছেন আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে। বিষয়টিকে কিভাবে দেখেন ?
আমার মনে হয়, মানুষ হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই নিজেদের ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত। যখন মানুষ প্রচুর খ্যাতি পেয়ে যায়, তখন তার নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই থাকা উচিত। এ সময়টায় নিজের প্রতি যে দায়বদ্ধতা আছে তার পাশাপাশি দর্শক ভক্তদের প্রতিও দায়বদ্ধতা অনুভব করে নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত, সাবধানে থাকা উচিত।
সালমান শাহ বেঁচে থাকলে তাকে স্ক্রীনে পেতে চাইতেন ?
আমরা তো আসলে ওনাকে পাইনি, আমার মনে হয়, মাত্র ওনার ৪৮তম জন্মদিন পালন করলাম আমরা। উনি যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে হিরোই থাকতেন। তাকে আমি হিরো হিসেবেই চাইতাম।