আট ওভার পার না হতেই নেই ৫ উইকেট। ইনিংসের আধেক শেষ হতে হতে গ্যালারির দর্শক কমে গেল অর্ধেকে। রান তাড়ায় ধুঁকতে ধুঁকতে সিলেট এগোচ্ছিল বড় পরাজয়ের দিকে। কিন্তু সাতে নেমে ঝড়ো ফিফটিতে ম্যাচ জমিয়ে দিলেন সোহাগ গাজী। পরে তাদের লোয়ার অর্ডারের বীরত্বে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচ হলো টাই। গ্যালারিতে থেকে যাওয়া দর্শকেরা ভাসছিলেন অভাবনীয় প্রাপ্তির উচ্ছ্বাসে। তবে শেষ রক্ষা হলো না। সুপার ওভারেও নাটকীয়তার পর সিলেটকে হারিয়ে দিল কুমিল্লা।
বঙ্গবন্ধু বিপিএলের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটি সম্ভবত হয়ে গেল সিলেট পর্বের প্রথম দিনে। বৃহস্পতিবার রাতের লড়াইয়ে ম্যাচ টাই হওয়ার পর সুপার ওভারে সিলেট থান্ডারকে হারিয়ে দেয় কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স।
সিলেটের একাদশে তিনিই কেবল সিলেটের সন্তান। দলের চরম ব্যর্থতার টুর্নামেন্টে সফলও কেবল তিনিই। ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচে স্থানীয় দর্শকদের কিছুটা আনন্দের উপলক্ষ এনে দিলেন সেই ইবাদত হোসেনই। তার সঙ্গে অন্য বোলারদেরও ভালো পারফরম্যান্সে কুমিল্লাকে বড় স্কোর গড়তে দেয়নি সিলেট।
বিপিএলে সিলেট পর্বের প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার সিলেট থান্ডারের বিপক্ষে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪০ রান করেছে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স।
এবারের আসরে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতায় ইবাদত নিয়েছেন ৩ উইকেট।
দুই দলই এই ম্যাচে নেমেছে নতুন অধিনায়কের নেতৃত্বে। পারিবারিক কারণে দাভিদ মালান দেশে ফিরে যাওয়ায় কুমিল্লার হয়ে টস করেছেন সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেনের চোটে সিলেটের নেতৃত্বে আন্দ্রে ফ্লেচার।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা কুমিল্লার শুরুটা ছিল থারাঙ্গার বাউন্ডারি স্রোতে। এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা ব্যাটসম্যান প্রথম ওভারে মারেন দুটি বাউন্ডারি, তৃতীয় ওভারে তিনটি। ৪ ওভারেই কুমিল্লা তুলে ফেলে ৪২ রান।
স্টিয়ান ফন জিলকে ফিরিয়ে সিলেটকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন ইবাদত। সেখান থেকেই কুমিল্লার পেছন পানে হাঁটা শুরু।
তিনে নেমে সৌম্য সরকার শুরু করেছিলেন ইবাদতকে বাউন্ডারি মেরে। কিন্তু ৫ রানেই বিদায় নেন বাজে শটে। সোহাগ গাজীর স্টাম্প সোজা বল মিড উইকেটে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন শর্ট কাভারে।
থারাঙ্গা তবু রানের গতি সচল রাখছিলেন। কিন্তু ৩১ বলে ৪৫ রান করা ব্যাটসম্যান এলবিডব্লিউ হয়ে যান সোহাগের নিচু হয়ে যাওয়া বলে।
মাঝের ওভারগুলোতে কুমিল্লাকে চেপে ধরেন শেরফেইন রাদারফোর্ড। তার জেন্টল মিডিয়াম পেসে হাঁসফাঁস করেন ব্যাটসম্যানরা। পুরো সিরিজে ধুঁকতে থাকা ইয়াসির আলি চৌধুরি উইকেট দিয়ে আসেন দৃষ্টিকটু শটে। এবার ৭ ইনিংস খেলে তার রান এখন ৫৯।অনেকটা সময় উইকেটে থেকেও ছন্দ পাননি সাব্বির। তার ব্যাটিং দেখাটাও ছিল চোখের জন্য যন্ত্রণাদায়ক। ২৫ বল খেলে নেই কোনো বাউন্ডারি। ঠিকমতো টাইমিং করতে পেরেছেন কমই। ১৭ রানে বোল্ড রাদারফোর্ডের স্লোয়ারে।
পরের দিকে ডেভিড ভিসা ১২ বলে করেন ১৫। ভেতরে ঢোকা বলে তাকে এলবিডব্লিউ করেন ইবাদত। এই পেসারের স্লোয়ারেই একটি ছক্কা মেরে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন অপরাজিত থেকে যান ১৪ বলে ১৯ রানে।
ইবাদতের তৃতীয় শিকার ছিলেন সানজামুল ইসলাম। তার চেয়েও অবশ্য ভালো বোলিং ফিগার রাদারফোর্ডের। ক্যারিয়ারে আগের ৩৩ ম্যাচ মিলিয়ে যার উইকেট ছিল দুটি, সেই তিনিই এদিন ৩ উইকেট নিয়েছেন ১৯ রানে।
জিজিএনটোয়েন্টিফোর.কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।