আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিচারাধীন মামলা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা যাবে না- সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসনের এই নির্দেশনা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। শিগগিরই এ নির্দেশনা সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়ে ভুল বোঝাবুঝি দূর করা হবে বলে আশা করেন তিনি।
সোমবার দুপুরে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে তার দফতরে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। পরে সুপ্রিমকোর্টের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আজ-কালের মধ্যে এ বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হবে।
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর আইনমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আমার মাঝে মাঝে কথা হয়ে থাকে। তাই এখানে আসা অস্বাভাবিক কিছু না।
তিনি বলেন, এ নির্দেশনা নিয়ে বিস্তারিত আলাপ হয়েছে। প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশনায় যদি কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে, ব্যাপারটা তারা বিবেচনা করে দেখবেন।
কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে আইনগত প্রতিকার কী- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদের অধিকারী। কোনো সমস্যা যদি হয়, তাহলে তার কাছে নিশ্চয়ই কোনো না কোনো নালিশ পাঠানো যেতে পারে। তার যথেষ্ট ক্ষমতা আছে এবং তিনি সংবিধানের মধ্য থেকেই বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন। এসব তার বিবেচ্য বিষয়। ষোড়শ সংশোধনীর বিষয়ে যে শূন্যতা, সে শূন্যতার কারণে কোনো কিছুই রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো যাবে না, এটা ঠিক না।
গত ১৬ মে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়, ইদানিং কোনো কোনো ইলেকট্রনিক মিডিয়া তাদের চ্যানেলে এবং কোনো কোনো প্রিন্ট মিডিয়া তাদের পত্রিকায় বিচারাধীন মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সংবাদ স্ক্রল পরিবেশন করছে, যা একেবারেই অনভিপ্রেত। বিচারাধীন কোনো বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন স্ক্রল করা থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসনের এ বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে এদিন সন্ধ্যায় প্রধান বিচারপতি কাছে চিঠি দেয় ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ)। সাংবাদিকরা ‘ব্যথিত ও মর্মাহত’ জানিয়ে এলআরএফের এ চিঠিতে বলা হয়, বিজ্ঞপ্তিটি স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী। পরে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) ও এডিটরস গিল্ড এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আলাদা আলাদা বিবৃতি দেয়। চিঠিতে সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞপ্তিটি প্রত্যাহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।