পপসংগীতের কিংবদন্তি মাইকেল জ্যাকসনের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েও প্রাথমিক পর্যায়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন অস্কারজয়ী ভারতীয় সুরকার এ আর রহমান। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের সাক্ষাৎ হয়েছিল।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে অস্কারজয়ী এই সংগীত পরিচালক জানান, ঘটনাটি ২০০৯ সালের। লস অ্যাঞ্জেলসে তার প্রচার সহায়কের মাধ্যমে মাইকেলের ম্যানেজারের সঙ্গে আলাপ হয়। শিল্পীর সঙ্গে দেখা করার আবদার জানান রহমান। জানতে পারেন, ই-মেলের মাধ্যমে তাকে পরে সাক্ষাতের সময় জানানো হবে। রহমান জানান, তার পর মাইকেলের পক্ষ থেকে আর কোনো উত্তর আসেনি। তিনিও হাল ছেড়ে দেন।
রহমান ভাবলেন জ্যাকসনের সঙ্গে হয়তো আর দেখা হবে না। কিন্তু অস্কারের চার দিন আগে এজেন্ট রহমানকে বলেন, ‘হেই, মাইকেল তোমার সঙ্গে দেখা করতে চান।’
সে সময় তার অস্কার পারফরম্যান্সের মহড়া নিয়ে দারুণ ব্যস্ত রহমান। অস্কারের ঝলমলে রাত নিয়েই তার পুরো মনোযোগ। এজেন্টকে বললেন, ‘যদি পুরস্কার জিতি, তাহলেই তার সঙ্গে দেখা করব। অন্যথায় তার সঙ্গে দেখা করতে চাই না।’
অতঃপর স্লামডগ মিলিয়নিয়ার ছবির সংগীত করার জন্য অস্কার জেতেন এ আর রহমান। ফলে কিং অব পপের সঙ্গে দেখা হওয়ার পথে আর কোনো বাধা রইল না।
অস্কার জয়ের কয়েক দিন পর মাইকেলের সঙ্গে দেখা করেন রহমান, লস অ্যাঞ্জেলসে শিল্পীর বাড়িতেই তিনি হাজির হন। মাইকেল তার সন্তানদের সঙ্গেও রহমানের আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন। রহমানের কথায়, তিনি বলেছিলেন যে গানগুলো ওর পছন্দ হয়েছে। কোন কর্ড ব্যবহার করেছি, সেটাও তিনি জানতে চেয়েছিলেন।
রহমানের মুখেই শুনুন তার পরের বয়ান, ‘তিনি দরজা খুলে দিলেন। হাতে সেই আইকনিক গ্লাভস। চোখে সানগ্লাস। আমি দুটি অস্কারজয়ের গৌরব নিয়ে তার সামনে দাঁড়ালাম, যে পুরস্কার নিয়ে পুরো ভারত তখন পাগল।’ গান নিয়ে বিস্তর আলাপ করেন তারা। পাক্কা দুই ঘণ্টা কথা বলেছিলেন তারা।
রহমান বলেন, আমরা ভালোবাসা ও ঘৃণা নিয়ে আলোচনা করেছি। ‘জয় হো’ গান নিয়ে কথা বলেছি। তিনি আমাকে বলছিলেন আমার সংগীতের মতোই তার নাচের প্রতিটি ভঙ্গিও হৃদয় থেকে উঠে আসে। হঠাৎ তিনি উঠে পড়ে নাচতে থাকেন। আমি বজ্রাহতের মতো স্তম্ভিত হয়ে যাই।
এ আর রহমান জানান, আমেরিকায় অনুষ্ঠান শেষ করে দেশে ফিরে আসার পরেও মাইকেলের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়েছিল। এক সঙ্গে দু’জনের কাজও চূড়ান্ত হয়। কিন্তু সে বছরেই ২৫ জুন মাইকেল মারা যান।