আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপনির্বাচনের নির্বাচনী ইশতেহারে সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে তিনি নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি ঢাকা শহরের সমস্যাগুলোও তুলে ধরেন। এ জন্য করণীয়গুলো উল্লেখ করেন। তিনি বিজয়ী হলে সেগুলো করার আশ্বাস দেন। ‘সবাই মিলে সবার ঢাকা’ স্লোগানকে সামনে রেখে নাগরিক ও প্রশাসন একতাবদ্ধ হয়ে একটি সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ার আহ্বান জানান আতিকুল ইসলাম। এ সময় নগর গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, সঙ্গীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।
আতিকুল ইসলাম তার নির্বাচনী ইশতেহারে বলেন, ঢাকা শুধু আমাদের প্রাণের শহরই নয়, ঢাকার আছে ৪০০ বছরের গৌরবগাথা। নানা প্রতিবন্ধকতায় জর্জরিত হয়েও ঢাকার বিকাশ ঘটেছে প্রবল গতিতে। তিনি বলেন, আমার প্রধান লক্ষ্য এই বিকাশের পথে ঢাকা যেন তার গৌরবকে না হারায়, তা নিশ্চিত করা। এ নগরকে কেবল বসবাসের উপযোগী করে তোলাই নয়, সুবসবাসের জন্য একটি সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ে তোলা।
নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়, সুস্থ ঢাকার জন্য প্রয়োজন নির্মল বাতাস ফিরিয়ে আনা। এ জন্য নগরীর সড়ক, পথ, খোলা জায়গায়, ভবন-স্থাপনার ছাদে পরিকল্পিত বনায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। পরিকল্পিতভাবে বর্জ্য অপসারণ করে জ্বালানি শক্তিতে রূপান্তর করা হবে। পর্যাপ্ত আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ। মশক নিধন, জলাশয় দখলমুক্ত করে নাগরিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া ও জলাশয়কে পরিচ্ছন্ন রাখা, এলাকাভিত্তিক দৃষ্টিনন্দন উন্মুক্ত পার্ক ও আধুনিক খেলার মাঠের ব্যবস্থা, তারুণ্যকে অনুপ্রাণিত করতে সাংস্কৃতিক বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া ভেজালমুক্ত খাবার সরবরাহের জন্য প্রতিটি এলাকায় ফার্মার্স মার্কেট স্থাপন ও অপরাধ ও মাদকের বিস্তার রোধে সৃজনশীল উন্নয়ন কার্যক্রমের বিস্তার করা গেলে সুস্থ একটি ঢাকা শহর উপহার দেওয়া সম্ভব হবে।
সচল ঢাকার ক্ষেত্রে আতিকুল ইসলামের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে, সকল নগর পরিবহন ব্যবস্থার জন্য একটি ডিজিটাল, সমন্বিত ই-টিকিটিং সেবা চালু করা, যাতে থাকবে বয়স্ক, মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুবিধা; অ্যাপভিত্তিক ডিজিটাল সময়সূচি প্রবর্তন এবং আধুনিক, সুনিয়ন্ত্রিত ও নারীবান্ধব গণপরিবহন নিশ্চিত করা। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ট্রাফিক সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ, আধুনিক ডিজিটালাইজড বাসস্টপ এবং নাগরিকবান্ধব বাস ও ট্রাক টার্মিনাল স্থাপন করা প্রয়োজন। সাইকেল ও মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা লেন ও সাইকেল পার্কিং সুবিধা তৈরি করা। পথচারীবান্ধব ফুটপাত, পর্যাপ্ত ফুট ওভারব্রিজ, আন্ডারপাস নির্মাণ, সড়ক সংস্কার, জেব্রা ক্রসিংয়ে রাস্তা পারাপার নিশ্চিত করা ও এলাকাভিত্তিক বহুতল আন্ডারগ্রাউন্ড কার পার্কিং তৈরি করলে গতিশীল ঢাকা তৈরি হবে।
এ ছাড়া আধুনিক ঢাকা গড়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, নগরীর বর্ষাকালীন জলাবদ্ধতা নিরসন, পরিবেশবান্ধব সড়কবাতি স্থাপন, ডিজিটাল ই-সার্ভিস চালু, দুর্নীতি রোধে অ্যাপভিত্তিক তথ্য প্রদান, সীমিত আয়ের মানুষের জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, রাস্তাঘাটের আধুনিকায়ন, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম উৎসাহিত করা। এসব কাজ করতে পারলেই একটি সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা তৈরি হবে। আতিকুল ইসলাম নির্বাচিত হলে এ কাজগুলোই করতে চান। এ জন্য নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।