এক হাজার টাকা দাম কমানোর দুই সপ্তাহের মধ্যে সোনার দাম ভরিতে বাড়ল দুই হাজার টাকা বেশি।
ঘটা করে স্বর্ণ করমেলার পর এই দাম বাড়ানো হলেও এর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা।
সাড়ে চার মাস পর গত মাসের মাঝামাঝিতে বাজেট ঘোষণার দিন প্রতি ভরি ভালো মানের সোনার দাম দেড় হাজার টাকা কমিয়েছিল বাজুস। কিন্তু তার চার দিন পরই দাম বাড়িয়ে আগের অবস্থায় ফেরত নেওয়া হয়।
এরপর মাসের শেষে প্রথমবারের মতো স্বর্ণ করমেলার আয়োজন করা হয়। তাতে ব্যবসায়ীদের হাতে থাকা অপ্রদর্শিত প্রতি ভরি সোনা ১ হাজার টাকায় বৈধ করার সুযোগ ছিল।
কিন্তু ওই মেলায় ব্যবসায়ীদের আশা পূরণ না হওয়ার পর বুধবার ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৪১ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়।
স্বর্ণ করমেলায় সাড়া না পাওয়াই কি এর কারণ- জানতে চাইলে আগাওয়ালা বলেন, “তার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।”
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে স্থানীয় বাজারে তাদেরও দাম বাড়ানো হয়েছে।
আগরওয়ালা বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারে ৫ বছরের মধ্যে সোনার দর সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থান করছে। ৫ বছর আগে প্রতি আউন্স সোনার দর ছিল ১ হাজার ৫০ ডলার। এক বছর আগে ছিল ১ হাজার ১৭৩ ডলার। আজ (বুধবার, ৩ জুলাই) সেই সোনা ১ হাজার ৪২৩ ডলারে বিক্রি হয়েছে।
“গত ১৫ দিনে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দর ১০০ ডলার (প্রায় সাড়ে ৮ হাজার টাকা) বেড়েছে। আমরা সেখানে ২ হাজার টাকা বাড়িয়েছি।”
তারপরও বাংলাদেশে সোনার দর ‘সবচেয়ে কম’ বলে দাবি করেন আগরওয়ালা।
গত ১৩ জুন ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ১৬৬ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। মাত্র চার দিনের মাথায় ১৭ জুন সেই সোনার দর কমিয়ে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়।
বুধবার আবার দর বাড়িয়ে বাজুস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে নতুন দর কার্যকর হবে।
নতুন দর অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনা বৃহস্পতিবার থেকে ৫২ হাজার ১৯৬ টাকায় বিক্রি হবে। ২১ ক্যারেট সোনা বিক্রি হবে ৪৯ হাজার ৮৬৪ টাকায়। ১৮ ক্যারেট সোনার দাম হবে ৪৪ হাজার ৮৪৮ টাকা।
বুধবার পর্যন্ত প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনা ৫০ হাজার ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। ২১ ক্যারেট সোনা বিক্রি হয় ৪৭ হাজার ৮২২ টাকায়। ১৮ ক্যারেট সোনার দর ছিল ৪২ হাজার ৮০৭ টাকা।
এ হিসাবে ২২, ২১ এবং ১৮ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ২ হাজার ৪১ টাকা করে বেড়েছে।
তবে সনাতন পদ্ধতির সোনার দামে কোনো হেরফের হয়নি। আগের ২৬ হাজার ৮২৭ টাকা ভরিতেই বিক্রি হবে এই সোনা।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটে ৯১ দশমিক ৬ শতাংশ, ২১ ক্যারেটে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ১৮ ক্যারেটে ৭৫ শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা থাকে।
সনাতন পদ্ধতির সোনা পুরনো অলঙ্কার গলিয়ে তৈরি করা হয়। এ ক্ষেত্রে কত শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা মিলবে, তার কোনো মানদণ্ড নেই।
অলংকার তৈরিতে সোনার দরের সঙ্গে মজুরি ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) যোগ করে দাম ঠিক করা হয়।
প্লাটিনামের ভরি ৬৩৮৬০ টাকা
বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশের বাজারে প্রতি ভরি ২৩ ক্যারেট প্লাটিনাম ৬৩ হাজার ৮৬০ টাকায় বিক্রি হবে। বুধবার পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছিল ৬১ হাজার ৮১৯ টাকায়।
১৩ জুন থেকে প্লাটিনামের দর নির্ধারণ করে দিচ্ছে বাজুস। তার আগে কখনও বাংলাদেশের বাজারে মূল্যবান এই ধাতুটির দাম ঠিক করে দেয়া হত না।
রুপার ভরি ৯৩৩ টাকাই
রুপার দাম বাড়েনি। আগের ৯৩৩ টাকা ভরিতেই বিক্রি হবে এটি।