রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার ‘তারণ্যের সমাবেশ’ করবে বিএনপির তিন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন জাতীয়বাদী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল।
এজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সমাবেশের মৌখিক অনুমতিও পেয়েছে তারা। বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে তার কার্যালয়ে বৈঠক শেষে যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু একথা জানান।
তবে তারণ্যের সমাবেশের জন্য প্রথমে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আবেদন করা হয়েছিল। ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের অন্তত ১০ জন কেন্দ্রীয় নেতা যুগান্তরকে বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার ‘তারণ্যের সমাবেশের ভেন্যু হিসেবে নির্ধারণ করা ঠিক হয়নি। নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ হবে ধরে নিয়েই সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শনিবার ছুটির দিন। নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অতীতে প্রায় সব কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সব কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে।
তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, পুলিশের দিক থেকে গত বছরের ১০ ডিসেম্বরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের কথা বললেও বিএনপি সে সময় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার ব্যাপারে অনড় ছিল। এই নিয়ে রাজনীতিতে বহু সংকট সৃষ্টি হয়। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কিছু নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে একজন বিএনপি কর্মীও নিহত হন। পরে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ করে ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন ঘোষণা করে বিএনপি। সে সময়ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে তারণ্যের সমাবেশ সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার প্রস্তাব মেনে নেওয়ার নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
ডিএমপি সদরদপ্তরের সামনে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের টুকু বলেন, ‘দুই পক্ষের (পুলিশ ও বিএনপি) মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে সমাবেশের ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়েছে। পুলিশ মৌখিকভাবে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। আমরা পুলিশকে লিখিত আবেদন দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে তারণ্যের সমাবেশ একটি মাঠে করতে বলেছিল। আমরা প্রথমে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে করতে চেয়েছিলাম। সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি আবেদনও দিয়েছি। কিন্তু তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কথা বলেছেন। আমরাও তাই বলেছি।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও ঢাকা দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, স্বেচ্চাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, ছাত্রদলের সভাপতি রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, শনিবার তারণ্যের সমাবেশের জন্য প্রথমে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আবেদন করা হয়েছিল। পরে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার জন্য আবেদন করা হয়েছে। সেখানে পুলিশ ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।
সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, দেশে ৪ কোটি ৭০ লাখ তরুণ ভোটার, তারা ভোট দিতে পারে না, ভিন্ন মতের দল করার কারণে চাকরি থেকে বঞ্চিত। তাই তরুণদের সম্পৃক্ত করে দেশ বাঁচাতে তারণ্যের এই সমাবেশ করছি। এরমধ্যে পাঁচটি বড় শহরে আমরা তারুণ্যের সমাবেশ করেছি। সর্বশেষ আগামী ২২ জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে তারণ্যের সমাবেশ।
গত মাসে চট্টগ্রাম থেকে প্রথম তারণ্যের সমাবেশ শুরু হয়। এরপর বগুড়া, বরিশাল, সিলেট, খুলনায় তারণ্যের সমাবেশ করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল।