ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুতি গোষ্ঠী সৌদি আরবের তেল শিল্পের কেন্দ্রস্থলের দুটি প্ল্যান্টে ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
এই প্ল্যান্ট দুটির মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম পেট্রলিয়াম প্রসেসিং স্থাপনাও রয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
শনিবারের এ হামলায় তেল উৎপাদন ও রপ্তানি বিঘ্নিত হয়েছে বলে তিনটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে।
ড্রোন হামলায় সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়াত্ত কোম্পানি অ্যারামকোর দুটি তেলক্ষেত্রে আগুন ধরে গিয়েছিল, পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, শনিবার আবকায়িক ও খুরাইস প্রদেশে ‘সৌদি অ্যারামকো ফ্যাক্টোরিস’র তেলক্ষেত্র দুটিতে হামলার এ ঘটনা ঘটে।
তবে হামলায় ব্যবহৃত ড্রোন কাদের ছিল বা কারা এ হামলার পেছনে রয়েছে সে বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দেননি।
( আবকায়িকে অ্যারামকোর কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পর ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে।)
প্রতিনিধিদের উদ্ধৃতি দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালিত এখবারিয়া টেলিভিশন হামলায় কেউ হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে সরকারি কোনো বিবৃতি পাওয়া যায়নি।ঘটনাস্থলের কাছে থাকা রয়টার্সের এক প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক ওই এলাকায় অন্তত ১৫টি অ্যাম্বুলেন্স দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। আবকায়িকের চারপাশে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতির কথাও জানিয়েছেন তিনি।
অপরিশোধিত তেলের দৈনিক উৎপাদনের ৫০ লাখ ব্যারেলের ওপর হামলার প্রভাব পড়েছে বলে ঘটনার বিষয়ে জ্ঞাত দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে; কিন্তু আর বিস্তারিত কিছু জানাননি তারা।
এ পরিমাণ সৌদির মোট উৎপাদনের প্রায় অর্ধেক ও বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহের প্রায় পাঁচ শতাংশ বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
ভোররাতে চালানো এ ড্রোন হামলায় সৌদি অ্যারামকোর স্থাপনাগুলোতে বেশ কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে বলে বিশ্বের বৃহত্তম তেল রপ্তানীকারী দেশটি পরে জানিয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন রপ্তানি অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে। কিন্তু হামলার পর থেকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অ্যারামকো কোনো মন্তব্য করেনি। তেল উৎপাদন ও রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না, কর্তৃপক্ষও তা নিশ্চিত করেনি।
১০টি ড্রোন ব্যবহার করে হামলাটি চালানো হয়েছে বলে হুতিরা দাবি করেছে। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা মাঝে মধ্যেই সৌদি আরবে ড্রোন হামলা চালায়। তবে সবগুলোর মধ্যে এ হামলাটি সবচেয়ে বেপরোয়া ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে আবকাইক তেলক্ষেত্রে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে এবং ঘন কালো ধোঁয়া কুণ্ডুলি পাকিয়ে আকাশে উঠে যেতে দেখা গেছে।
( আবকায়িকে অ্যারামকোর কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পর ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। )
হামলার পর অ্যারামকো জরুরি পরিস্থিতির মাত্রা বৃদ্ধি করে সংকটকালীন বৈঠক করছে বলে তিনটি সূত্র রয়টাসর্কে জানিয়েছে।আবকায়িক তেলক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তেল উৎপাদিত হয়।
এর আগে ২০০৬ সালে আল কায়দা আবকাইক তেলক্ষেত্রে হামলা চালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিল।