খালেদার চিকিৎসা নিয়ে কথা বলার অধিকার কাদেরের নেই: ফখরুল

bbb20191102210925

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন, তার দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে কথা বলার অধিকার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেই।

শনিবার (২ নভেম্বর)  রাতে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি মত দেন।

বিএনপি মহাসচিব জানান, সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার করা সব চুক্তির বিষয়ে জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং তথ্য কমিশনের কাছে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফখরুল বলেন, (কারাবন্দি) খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কী আছে, তা নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের কথা বলার কোনো অধিকার নেই। কারণ তিনি ডাক্তার নন। তিনি তার রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলছেন। আপনারা রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ বাদ দিয়ে মানবিক হোন। সাধারণ একটা বন্দির অধিকার আছে সুচিকিৎসা পাওয়ার। যেখানে দেশনেত্রী সুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে গেছেন। আর এখন তিনি কারও সাহায্য ছাড়া কিছুই করতে পারেন না। এটাতো বাস্তবতা। এটা কোনো নতুন কথা নয়। তাই আমরা বলি, এসব অসত্য  কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে এবং জনগণকে প্রকৃত সত্য থেকে দূরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে ধীরে ধীরে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য এসব মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথায় অন্তত আমি বিস্মিত হয়েছি। তিনি যখন অসুস্থ হয়েছেন, আমরা তাকে দেখতে গিয়েছি খোঁজখবর রেখেছি এবং রোগমুক্তি কামনা করেছি। তাই খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে রসিকতা করা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের লক্ষণ নয়।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরে ভারতের সঙ্গে হওয়া চুক্তির বিষয় খোলাসা করার আহবান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ভারতের সঙ্গে যেসব চুক্তি হয়েছে এসব বিষয়ে জনগণ জানতে চায়। কী কী চুক্তি হয়েছে জনগণের কাছে খোলাসা করুন। বারবার বলা হয়েছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু আমাদের সমস্যা সমাধানের বিষয়গুলো আমরা লক্ষ্য করছি না। এ বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রী এবং তথ্য কমিশন বরাবর চিঠি দেবো।

জাতীয় দুর্নীতি আড়াল করার জন্যই সরকার বর্তমান শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকার এবং তার মন্ত্রীরা জোরেশোরে বলছেন শুদ্ধি অভিযান চলছে। কিন্তু আমরা মনে করি জাতীয় দুর্নীতি  আড়াল করার জন্যই এসব ছোটখাট অভিযান চালানো হচ্ছে। পুরো জাতি আজ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। সরকারের লোকেরা সরাসরিভাবেই এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। নিরপেক্ষ সংস্থার মাধ্যমে দুর্নীতির তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবিতে সরকারি লোকদের নিয়োগ দেওয়ার যে প্রক্রিয়া চলছে তাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে নিরুৎসাহিত হবে বলেও অভিমত দেন ফখরুল।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

লন্ডন থেকে স্কাইপের মাধ্যমে সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ।

স্বেচ্ছাচারিতা করলে ধ্বংস হয়ে যাবেন: মির্জা ফখরুল

==================================

সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নিয়মবহির্ভূত কাজ কারও জন্য মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে রাষ্ট্রকে বেশিদিন পরিচালনা করা যায় না। নিয়মের বাইরে যারা চলবে, তারা নিশ্চয়ই একদিন হারিয়ে যাবে। রাষ্ট্র, সমাজ, রাজনীতি সবকিছু চলমান রাখার স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে যারা স্বেচ্ছাচারিতা বা স্বৈরাচারী হবে, তারা বেশিদূর এগোতে পারবে না। কর্মই তাদের ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে।

শনিবার নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নতুন কমিটির নেতারা দলের মহাসচিবের উত্তরায় বাসভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ মহানগরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন স্থানীয় নেতারা।

বিএনপি মহাসচিব সংগঠনের কার্যক্রম আরও গতিশীল, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, সহসভাপতি অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, প্রথম যুগ্ম সম্পাদক আবদুস সবুর খান সেন্টু ও সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু।

বুধবার অ্যাডভোকেট আবুল কালামকে সভাপতি ও এটিএম কামালকে সাধারণ সম্পাদক করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ১৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

Pin It