স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার আহ্বান

1689443646.HPM

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (১৫ জুলাই) রাতে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যবসায়ী সম্মেলন’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ, এটা গঠনে ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন, আর ব্যবসায়ীরা এগিয়ে আসুন, আপনারা কাজ করেন।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতিকে আরও সবল, মজবুত করে গড়ে তোলেন। আমরা আছি আপনাদের পাশে।

২০৪১ সালে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বদলে গেছে বাংলাদেশ, আজকে তো বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। তো সেই বাংলাদেশকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সে দায়িত্ব আজকে আপনাদের ওপর। কারণ বাণিজ্য বসতি লক্ষ্মী। শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য যত প্রসারিত হবে, মানুষের আর্থিক অবস্থা তত ভালো হবে।

ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহযোগিতা করে যাওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা করে দিয়েছি, এখনো যেটুকু সমস্যা আছে করব। তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে আমাদের অর্থনীতির ওপর ভীষণ চাপ, এটাও আপনাদের মাথায় রাখতে হবে।

আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসাবান্ধব সরকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, এইটুকু তো দাবি করতে পারি, ওই হাওয়া ভবনের মতো খাওয়া ভবনও নাই, কিছুই নাই। আপনাদের তো কেউ ঝামেলা করবে না। সব সময় ব্যবসা বাণিজ্যে আমরা সহায়তা করে যাব।

ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহযোগিতা করে যাওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা করে দিয়েছি, এখনো যে টুকু সমস্যা আছে করবো। তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে আমাদের অর্থনীতির ওপর ভীষণ চাপ এটাও আপনাদের মাথায় রাখতে হবে।

আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রসারে সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে ব্যবসাবান্ধব সরকার। সেটা নিশ্চয়ই আপনারা টের পেয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা কিন্তু ব্যবসা করি না। সরকারপ্রধান হিসেবে আমি তো ব্যবসার ব-ও বুঝি না। কিন্তু ব্যবসাকে উৎসাহিত করা, সুযোগ সৃষ্টি করা, পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া। একটা ব্যবসাবান্ধব সরকার আমাদের সেটাই আমরা নিশ্চিত করেছি।

বিএনপি আমলের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার ব্যবসার পরিবেশ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এইটুকু তো দাবি করতে পারি, ওই হাওয়া ভবনের মতো খাওয়া ভবনও নাই, কিছুই নাই। আপনাদের তো কেউ ঝামেলা করবে না। সব সময় ব্যবসা বাণিজ্যে আমরা সহায়তা করে যাব।

আওয়ামী লীগ কখনো ব্যবসায়ীদের দল-মত হিসেব করে বিবেচনা করে না বলেও জানান তিনি।

রপ্তানি বাড়াতে নতুন নতুন বাজার খোঁজার পাশাপাশি পণ্য বহুমুখীকরণ করার পরামর্শ দেন সরকারপ্রধান।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী দক্ষ-স্মার্ট জনশক্তি গড়তে সরকার ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিল্প, কল-কারখানা কিন্তু প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। আমাদের সামনে আছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, যেখানে বেশিরভাগ দক্ষ জনশক্তি দরকার।

দক্ষতা অর্জন ও প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, শুধু স্বপ্ন দেখলে হবে না, স্বপ্ন বাস্তবায়নেরও যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। সেই ধরনের চিন্তা ভাবনাও থাকতে হবে।

যুবকদের শুধু একটা পাস করে চাকরি পেছনে না ছুটে নিজেদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।

ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত এই ব্যবসায়ী সম্মেলনে বিভিন্ন সেক্টরের কয়েক ডজন ব্যবসায়ী নেতা বক্তব্য রাখেন।

প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা দীর্ঘ এ অনুষ্ঠানে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী সবার বক্তব্য শোনেন।

ব্যবসায়ীরা তাদের বক্তব্যে সরকারপ্রধান হিসেবে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি তাদের আস্থার কথা জানান।

ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে তারা আগামীতে শেখ হাসিনাকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চান।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান না জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, তারা চান না আগামীতে আবার ওয়ান/ইলেভেন ফিরে আসুক। তারা চান বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প শুধু শেখ হাসিনাই বলে মন্তব্য করে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘ সময়ের অভিজ্ঞতার আলোকে দেশ পরিচালনায় যে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। তাতে করে আগামী দিনেও তাকেই প্রয়োজন।

এ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান।

স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ব্যবসা, উন্নয়ন ও দেশের অগ্রগতির জন্য শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে হবে।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন—এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, আবদুল মাতলুব আহমদ, মীর নাসির হোসেন ও কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতির সভাপতি মির্জা নুরুল গনি শোভন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা)’র মোহাম্মদ আবুল বাশার, বেসিস সভাপতি রাসেল টি. আহমেদ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি শেখ নাসির উদ্দিন, বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী, এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির, চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী, এমসিসিআই সভাপতি সাইফুল ইসলাম, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের (বিএপিআই) সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল মুক্তাদির, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, এইচএসবিসি বাংলাদেশের সিইও মো. মাহবুব-উর রহমান, এফআইসিসিআই সভাপতি নাসের ইজাজ বিজয়, বাংলাদেশ নারী শিল্প ও বণিক সমিতির (বিডব্লিউসিসিআই) সভাপতি সালিমা আহমেদ, জেবিসিসিআই সভাপতি মিউং-হো লি, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান ইন্ডিটেক্স-এর আঞ্চলিক প্রধান জাভিয়ের কার্লোস সান্তোজা ওলসিনা, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএ সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান, বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম, সাবেক এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বারস অব কমার্স বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার, এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Pin It