শরীয়তপুরে প্রতারণা করে হজযাত্রীদের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছেন তাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। তিনি ফারিহা ওভারসিজ নামে একটি হজ এজেন্সির মুয়াল্লিম হিসেবে কাজ করতেন। ফারিহা ওভারসিজ নামে তাদের শরীয়তপুর শহরে ও রাজধানীর পুরানা পল্টনে হেড অফিস রয়েছে, যার লাইসেন্স নম্বর ৭৬৮। তাজুল শরীয়তপুরের পৌর এলাকার হাজরাসার গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় শরীয়তপুর পালং থানায় মামলাসহ জেলা পুলিশ সুপার অফিসে অভিযোগ দিয়েছেন প্রতারণার শিকার হজযাত্রীরা। প্রতারণার শিকার হয়েছেন পালং থানার সাবেক (ওসি) মনিরুজ্জামান, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মদ তালুকদার, ডামুড্যার কামাল মাস্টারসহ প্রায় ৪০ হজযাত্রী। মামলার আগে থেকেই তাজুল ইসলাম আত্মগোপনে রয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ফারিহা ওভারসিজে মুয়াল্লিম হিসেবে তাজুল ইসলাম ছয় বছর ধরে কাজ করছেন। এ বছর প্রত্যেক হজযাত্রীর সঙ্গে মুয়াল্লিম তাজুল ইসলামের তিন লাখ ২০ হাজার টাকার চুক্তি ছিল। বেশিরভাগ হজযাত্রী তাকে পুরো টাকা আগেই দিয়েছিলেন। কিছুসংখ্যক হজযাত্রীর টাকা ফারিহা ওভারসিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করলেও বেশি সংখ্যক যাত্রীর টাকা নিজের কাছে রেখে দেন তিনি। মাস দুয়েক আগে সব টাকা নিয়ে পালিয়ে যান তাজুল। এ অবস্থায় প্রায় ৪০ যাত্রীর হজে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আহম্মদ তালুকদার বলেন, আমিসহ আমার পরিবারের চারজন হজে যাওয়ার জন্য দু-তিন মাস আগে তাজুলের কাছে সাড়ে ছয় লাখ টাকা দিই। কিছুদিন পর থেকে তাজুলের আর কোনো খোঁজখবর পাই না। পরে হজ এজেন্সি ফারিহা ওভারসিজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, তাজুল অনেক আগে থেকেই তাদের ওখানে কাজ করেন না। তার কাছ থেকে তারাও টাকা পান।
আরেক ভুক্তভোগীর ছেলে আরাফাত বলেন, আমি বাবা-মায়ের হজে যাওয়ার জন্য ছয় লাখ টাকা দিই ২০১৮ সালে। সে বছর তাজুল বলেন, আপনাদের টাকা দিতে দেরি হয়ে গেছে, আপনাদের আগামী বছর নেব। যেহেতু বলছে আগামী বছর নেব, এ জন্য টাকাও নিই নাই তার কাছ থেকে। এ বছর তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। তার মোবাইলও বন্ধ। এ বিষয়ে ফারিহা ওভারসিজের মালিক ফজলুর রহমান বলেন, তাজুল পালানোর পর অনেকেই আমার কাছে এসেছিলেন। আমাকে বলে কেউ টাকা দেয় নাই। তার পরও আমি তাজুলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।