আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘সত্যের অপলাপ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, হেফাজতে নির্যাতন নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী সত্য কথা বলেননি। দেশের সংবাদমাধ্যম, আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যামিনেস্টি ইন্টান্যাশনাল, হিউম্যান রাইট ওয়াচের প্রতিবেদনে প্রতিবছরে নিরাপত্তা হেফাজতে ৪ থেকে ৭ শত জনের মৃত্যু হচ্ছে। শুধুমাত্র গত বছরই ৪ শত জনের উপর তথাকথিত বন্দুক যুদ্ধের নামে হত্যা করা হয়েছে।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ফখরুল এ প্রতিক্রিয়া জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, নিরাপত্তা হেফাজতে নির্যাতন এ দেশে একটি সাধারণ বিষয়। এর আগেও ফ্যানের সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিরোধী দলের অনেক নেতা-কর্মীর পায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করা হয়েছে। এরপরও প্রধানমন্ত্রী অবলীলায় অস্বীকার করলেন- হেফাজতে মৃত্যু হয় না। এটা সত্যের অপলাপ ছাড়া আর কিছুই না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে হেফাজতে নির্যাতন সরকারিভাবেই চলছে এবং সরকার বিরুদ্ধ মত ও যারা ভিন্নমত পোষণ করেন তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন আরও বেশি করে চলছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আলোকচিত্রী শিল্পী শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার করে অত্যাচার করা হয়েছে এবং হেফাজতে নেওয়ার পরে তার সঙ্গে নির্মম আচরণ করা হয়েছে।
ডেঙ্গু প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণের কাছে আওয়ামী লীগ সরকারের দায়বদ্ধতা নেই। তারা নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসেনি, জোর করে ক্ষমতায় এসেছে। সেজন্য তারা যা কিছু বলতে পারে, করতে পারে। শুরুতে তারা ডেঙ্গুকে কোনো গুরুত্বই দেয়নি। তারা এটাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছিলো। এ কারণে এটা এতো বেশি সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে যে, শুধু ঢাকাতে নয়, সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। মহামারী আকারেই ছড়িয়ে পড়েছে।
এবি সিদ্দিকীর দায়ের করা মামলার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এ মামলায় তারা সবাই বিস্মিত হয়েছেন। এই ধরনের ঘটনায় মামলা হবে তা চিন্তাই করতে পারিনি। এই এবি সিদ্দিকীকে কোনোদিন দেখেনও নাই। যদিও তিনি এর আগে খালেদা জিয়াসহ তাদের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা করেছেন। তার কাজই হচ্ছে মামলা করা। এটা তার পেশা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ মামলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। উচ্চ আদালতও মামলাকে সেভাবে না দেখে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দিয়েছেন। এ ধরনের মিথ্যা মামলা তৈরি হয় রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে রাজনীতি থেকে দুরে সরিয়ে রাখার জন্য। তবে এ মামলাটায় তারা সবাই বিস্মিত ও হতবাক হয়েছেন। বিশেষ করে বিচার বিভাগের বিষয়টা তাদের কাছে বোধগম্য নয়।
সরকারি দল বলছে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার মতো আন্দোলন বিএনপি পারছে না- এরকম প্রশ্নের বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিয়মের মধ্য দিয়ে চেষ্টা করছি। জনগণ যদি মনে করে যে, তারা অন্যভাবে দেখবেন- সেটা জনগণের ব্যাপার।