গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে পাঁচ হাজার ৫০০ জনের।
করোনায় প্রথম সংক্রমিত হওয়ার ২১৭তম দিনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৫৫০০ জনে।
শনিবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৪৫৩ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন দুই লাখ ৮১ হাজার ৩৬৫ জন। সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০৯টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১০ হাজার ৬৭৩টি। আগের নমুনাসহ মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১০ হাজার ৮৫৯টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২০ লাখ ৬১ হাজার ৫২৮টি।
এতে আরও বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার হার ১১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৭ দশমিক ২৭ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৬ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ২৩ জনের মধ্যে ১৫ জন পুরুষ ও নারী আট জন। এদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিভাগে ১৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে চার জন। এদের মধ্যে হাসপাতালেই মারা গেছেন ২৩ জন।
মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ১৬ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে দুই জন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ১০২ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৬৫ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন ৮৩ হাজার ৩৯ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন ৬৯ হাজার ৭৯৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৩ হাজার ২৪২ জন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ১৮ মার্চ দেশে করোনায় সংক্রমিত হয়ে প্রথম জনের মৃত্যু হয়। এরপর গত ২০ এপ্রিল মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০২ জনে দাঁড়ায়। গত ২৫ মে একদিনে ২১ জনের মৃত্যু হলে মৃতের সংখ্যা ৫০০ অতিক্রম করে। প্রতিদিনই মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় গত ১০ জুন মৃত্যুর সেই সংখ্যা এক হাজার ১২ জনে দাঁড়ায়। গত ২২ জুন একদিনে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় এক হাজার ৫০২ জনে। এরপরে ৫ জুলাই একদিনে ৫৫ জনের মৃত্যু হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় দুই হাজার ৫২ জনে। এর ১২ দিন পরে ১৭ জুলাই আরও ৫১ জনের মৃত্যু হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় দুই হাজার ৫৪৭ জনে। গত ২৮ জুলাই একদিনে দেশে করোনায় আরও ৩৫ জনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে মোট মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়ায় তিন হাজার জনে। গত ২৫ আগস্ট পর্যন্ত অর্থাৎ গত ২৮ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক হাজারের অধিক।
জানা যায়, দেশে করোনায় মোট মৃত পাঁচ হাজার ৫০০ জনের মধ্যে চার হাজার ২৩৭ জন পুরুষ ও নারী এক হাজার ২৬৩ জন।
মৃত্যুদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের মৃত্যু সবচেয়ে বেশি এর সংখ্যা দুই হাজার ৮২৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে এক হাজার ৪৭৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৬৯৮ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩০৬ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১২৪ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৪৫ জন আর শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৬ জন ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ৫০ দশমিক ৭৩ শতাংশ অর্থাৎ দুই হাজার ৭৯০ জন। চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ দশমিক ২০ শতাংশ অর্থাৎ এক হাজার ১১১ জন। রাজশাহী বিভাগে ছয় দশমিক ৫৩ শতাংশ অর্থাৎ ৩৫৯ জন। খুলনা বিভাগে আট দশমিক ১৩ শতাংশ অর্থাৎ ৪৪৭ জন। বরিশাল বিভাগে তিন দশমিক ৫১ শতাংশ অর্থাৎ ১৯৩ জন। সিলেট বিভাগে চার দশমিক ২৭ শতাংশ অর্থাৎ ২৩৫ জন। রংপুর বিভাগে চার দশমিক ৫৫ শতাংশ অর্থাৎ ২৫০ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে দুই দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ রয়েছেন ১১৫ জন।