জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ৭৫ পরবর্তী কলাম লেখকদেরও মুখোশ উন্মোচন হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ।
তিনি বলেন, যারা ৭৫ পরবর্তী কলাম লিখেছিলেন তারা নিশ্চয় খুশি হয়েই লেখেছিলেন।
জাতীয় শোক দিবস ও জাতির জনকের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘১৫ আগস্ট: নেপথ্যের কুশিলবদের বিচারে কমিশন চাই’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে ধ্বংস করা হয়েছে। সদ্য স্বাধীন দেশ মাত্র সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলছিলো, ঠিক সে সময় জাতির জনককে হত্যা করা হয়। সেসময় দেশের প্রবৃদ্ধি ছিলো সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ, অতিরিক্ত ১০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন হয়েছিলো।
ড. হাসান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু অনেক আইন করেছিলেন। উনার সেই আইনের (মৈত্রী চুক্তি) ফলে আমাদের স্থলসীমানা বেড়েছে, পরিচয়হীন সিটমহল বাসিদের পরিচয় মিলেছে। আমরা ১ লাখ ১৮ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্রসীমা পেয়েছি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার হলেও কুশীলবদের বিচার হয়নি। এজন্য একটি কমিশন করা প্রয়োজন। যার মাধ্যমে শতবছর পর হলেও আগামী প্রজন্ম সত্য ইতিহাস জানতে পারবে। তবে কমিশনে এটাও আনতে হবে যে, জাতির জনককে সপরিবারে হত্যার পর পত্রিকার পাতায় যারা কলাম লিখেছিলেন, তাদেরও মুখোশ উন্মোচন হতে হবে। কারণ তারা ৭৫ পরবর্তীতে খুশি হয়েই কলাম লেখেছিলেন।
প্রবন্ধ পাঠে সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, জাতির জনকের রায়ের সময় বিচারকরা বলেছিলেন খুনিদের সাজা হলো ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার হওয়া প্রয়োজন। তৎকালীন বরখাস্ত ডালিমদের জিয়ার সহযোগিতায় ক্যান্টনমেন্টে আসা যাওয়া ছিলো সেটা দেখা দরকার। ১৫ আগস্টের আগে ১৪ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাসদ বোমা ফাটান সেটাও দেখার বিষয়। যদিও রাজনৈতিক কৌশলে অনেকে সররকারের কাছে রয়েছেন তবে সাংবাদিকদের এ নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন আছে। জাতির জনককে হত্যার কুশীলবদের বিচারে কমিশন গঠন সময়ের দাবি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার একযুগ পর কেনো রায় হলো, কেনো তারও অনেক পরে তা কার্যকর হলো এটাও দেখতে হবে। নিশ্চই সেখানে ষড়যন্ত্র ছিলো সে কারণে এতো দেরি ছিলো। সে ষড়যন্ত্র থেমে নেই আজও চলমান। ষড়যন্ত্রের শেকড় অনেক গভীরে তা বের করে আনতে হবে।
ডিইউজের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম তপুর পরিচালনায় আয়োজিত আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহমুদ, সাবেক সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমি, সিনিয়র সাংবাদিক কাজী রফিক, জলিল ভুইয়া, ওমর ফারুকসহ বিএফইউজে ও ডিইউজের সাবেক এবং বর্তমান নেতাকর্মীরা।