বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগুন নিয়ে খেলবেন না। যে হাতে আগুন নিয়ে খেলবেন, সেই হাত পুড়িয়ে দেব।
তিনি বলেন, ‘এত লাফালাফি কেন? লম্ফঝম্ফ করে কোনো লাভ নেই। যে হাতে আগুন নিয়েছেন, ওই হাত পুড়িয়ে দেব। ভাঙচুর করবেন, ওই হাত ভেঙে দেব। আগুন হাতে আসবেন না, ওই হাত গুঁড়িয়ে দেব।’
বুধবার বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আমরা কাউকে আক্রমণ করব না। কিন্তু আক্রান্ত হলে কাউকে ছাড়ব না। নির্বাচনে আসবেন কি, আসবেন না, সেটা আপনাদের ব্যাপার। কিন্তু নির্বাচন হতে দেবেন না, এত শক্তি কোথায় পেলেন?
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভয় পান না। বাংলাদেশের এখন ভয় পাওয়ার দিন নয়। বাংলাদেশ আত্মশক্তিতে এমন বলীয়ান যে এখন শেখ হাসিনা মাথা উঁচু করে কথা বলতে পারেন। তিনি জানেন ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত হচ্ছে। তিনি ভয় পান না। কারণ তার শক্তির উৎস বাংলাদেশের জনগণ। আওয়ামী লীগের লাখ লাখ কর্মী।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির মন ছোট। এদের মন বড় নয়। এরা দেশের বড় অর্জনেও প্রশংসা করে না। দেশের উন্নয়ন দেখলে তাদের জ্বলে। সেই জ্বালায় জ্বালায় এরা মরে। তিনি বলেন, আইএমএফ প্রধান বলেছেন- বাংলাদেশ যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে, সমৃদ্ধ হচ্ছে- আমরা তার প্রশংসা করি। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশকে প্রশংসিত করে বক্তব্য দিয়েছেন।
জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর থেকে শেখ হাসিনা খালি হাতে ফেরেননি মন্তব্য করে তিনি বলেন, গায়ে পড়ে যাননি, নালিশ করতে যাননি। বাংলাদেশের জন্য তিনি গিয়েছেন। বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আন্দোলন হোঁচট খেয়ে গেছে। আবার ঘুরেফিরে পথ হারিয়ে পদযাত্রায় নেমেছে। লোকে বলে পতনযাত্রা।
সভাপতির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই আমরা গণতন্ত্র পেয়েছি, ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছি। তার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাবে। আজকের দিনে শপথ নিতে হবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে শেখ হাসিনাকে আবারো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে কেবল বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেননি। এই দেশকে তার পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, মতলববাজরা আবার নতুন মতলববাজি শুরু করেছে। তাদের চিহ্নিত করতে হবে। ড. ইউনূস নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। দুর্নীতিবাজ ড. ইউনূস দেশকে বিরাজনীতিকরণ করতে চেয়েছিল। ড. ইউনূসসহ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে ঠেকাতে হবে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের নেত্রীকে একে একে একুশবার হত্যার অপচেষ্টা হয়েছে। মৃত্যুঞ্জয়ী জননেত্রী শেখ হাসিনা মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে এসেছেন। তিনি দ্বিধান্বিত হন নাই, বিচলিত হন নাই, থমকে যান নাই বরং আরও দৃপ্তপদভারে বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু কখনো মৃত্যুভয়ে আপস করেননি। স্বাধীনতার জন্য, মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই-সংগ্রাম করেছেন কখনো ভীত হননি। ঠিক তেমনি বঙ্গবন্ধুকন্যাও মৃত্যুকে তুচ্ছ করে, আলিঙ্গন করে ১৭ মে দেশে ফিরে এসেছিলেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জেবুন্নেছা হক, সিমিন হোসেন রিমি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, প্রচার সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন ও মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভা সঞ্চালনা করেন উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম।