মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের পঞ্চম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার পাবনায় নানা আয়োজন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন, সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র সংসদ, সপ্তসুর, পাবনা ড্রামা সার্কেলসহ স্থানীয় সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এসব কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
পাবনার মেয়ে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি পরলোকগমন করেন। দিনটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ যৌথভাবে তার পৈতৃক ভিটা এবং কৈশোরের বিদ্যাপিঠ পাবনা টাউন গার্লস হাই স্কুল প্রাঙ্গণে স্মরণ সভার আয়োজন করেছে। এ ছাড়া সুচিত্রা সেন অভিনীত সিনেমা এবং সুচিত্রার ঠোঁট মেলানো সঙ্গীত পরিবেশনের আয়োজন করেছে কয়েকটি সংগঠন। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক মহানায়িকার পৈতৃক বাড়ি সংস্কার করে সুচিত্রা সংগ্রহশালা তৈরি করেছে। এ সংগ্রহশালাকে আধুনিক আর্কাইভ করার দাবি জানিয়েছেন জেলার সংস্কৃতিসেবীরা।
১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল পাবনায় সুচিত্রা সেনের জন্ম। শহরের গোপালপুর হেমসাগর লেনের একতলা পাকা পৈতৃক বাড়িতে তার শৈশব-কৈশোর কাটে। বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত পাবনা মিউনিসিপ্যালিটির স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে চাকরি করতেন। মা ইন্দিরা দাশগুপ্ত ছিলেন গৃহিণী। মা-বাবার পঞ্চম সন্তান ছিলেন সুচিত্রা।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের ক’মাস আগে করুণাময় দাশগুপ্ত সবকিছু রেখে সপরিবারে ভারতে পাড়ি দেন। একই বছর কলকাতার বিশিষ্ট বাঙালি শিল্পপতি আদিনাথ সেনের ছেলে দীবানাথ সেনের সঙ্গে সুচিত্রার বিয়ে হয়। তাদের একমাত্র সন্তান মুনমুন সেন। ১৯৫২ সালে চলচ্চিত্রজগতে প্রথম পা রাখেন সুচিত্রা সেন। প্রথম ছবি করেন ‘শেষ কোথায়’। তবে ছবিটি মুক্তি পায়নি। এরপর ১৯৫৩ সালে মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবি করে সাড়া ফেলেন তিনি।
পাবনা ড্রামা সার্কেলে সভাপতি ফারুক হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর মহানায়িকা সুচিত্রার নামে চলচ্চিত্র উৎসব হওয়া জরুরি। এ ছাড়া তার স্মৃতিবিজরিত বাড়িটি চলচ্চিত্র প্রশিক্ষণশালা অথবা আধুনিক আর্কাইভ করার দাবি করছি।
জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে মহানায়িকার বাড়িটির সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য একটি সুপার প্ল্যান করা হবে। সরকারিভাবে অনুদান পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ কাজে আমরা হাত দেব।
সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি এম সাইদুল হক চুন্নু বলেন, সুচিত্রা সেনের স্মৃতি ধরে রাখতে বিশাল প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে আজীবন মানুষের মনে বেঁচে থাকবেন মহানায়িকা।