বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিতদের উদ্দেশে বলেছেন, ভুয়া ভোটের মাধ্যমে যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তারা ভুয়া প্রতিনিধি। এই ভুয়া প্রতিনিধিদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। রোববার রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে সিপিবি সভাপতি এসব কথা বলেন।
২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টনে সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ১৮ বছর পূর্তিতে ওই ঘটনার বিচারের দাবিতে এদিন সিপিবি এই সমাবেশ করে। এ সময় মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের অন্ন হরণকারী সরকার। ভোট ও ভাতের লড়াই ঠিকমতো না করতে পারলে লুটেরা ধনিক শ্রেণি তাদের স্বার্থে বোমা হামলা চালাবে। প্রগতিশীল আন্দোলনগুলোকে আঘাত করবে। গুম-খুন-হত্যা অব্যাহত থাকবে।
সমাবেশে অন্য নেতারা বলেছেন, ক্ষমতায় যাওয়া ও ক্ষমতায় থাকার জন্য বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়। কিন্তু ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বন্ধের জন্য যেসব হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া প্রয়োজন, সেগুলোর হয় না। ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলার বিচার না হওয়ায় হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বন্ধ হয়নি।
তারা বলেন, দুর্নীতি, লুটপাট ও সাম্প্রদায়িকতাকে পরাজিত করে এবং গণতন্ত্র, শোষণমুক্ত সমাজ ও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ধারার বাইরে বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীলদের বিকল্প শক্তির সমাবেশ গড়ে তুলতে হবে। বাম প্রগতিশীলরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনস্বার্থের সংগ্রাম এগিয়ে নিচ্ছে। সচেতন মানুষকেও এই ধারায় সংগঠিত হতে হবে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবির উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, কেন্দ্রীয় নেতা শরিফুজ্জামান শরিফ প্রমুখ।
এর আগে সেখানে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে ২০ জানুয়ারির শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় সিপিবি, বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণসংহতি আন্দোলন, গণমুক্তি ইউনিয়ন, সাম্যবাদী দল, বাম ঐক্য ফ্রন্ট, স্কপ, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, খেলাঘর আসর, কৃষক সমিতি, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, ক্ষেতমজুর সমিতি, যুব ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়ন, গার্মেন্ট টিইউসি, শ্রমজীবী ও শিল্পরক্ষা আন্দোলন, হকার্স ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশন, একতা, সিপিবি নারী সেল ও লেখনী কম্পিউটার্সসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়।