যুক্তরাষ্ট্র সরকারে দীর্ঘ অচলাবস্থা অবসানের চেষ্টায় ‘সমঝোতার’ জন্য দেওয়া প্রস্তাব ডেমোক্র্যাটরা প্রত্যাখ্যান করায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের ওপর পাল্টা আক্রমণে চড়াও হয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নতুন পরিকল্পনাগুলো পেশ করার আগেই সেগুলো নাকচ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
মেক্সিকো সীমান্তে নিরাপত্তার জন্য দেয়াল নির্মাণের তহবিলের বিনিময়ে বেশ কিছু বিষয়ে আপোস প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। দেয়াল নির্মাণের তহবিল বরাদ্দের বিষয়টি সুরাহা না হওয়াতেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার দীর্ঘদিন ধরে আংশিক অচল হয়ে আছে।
কিন্তু এ সংকট কাটাতে ট্রাম্পের দেওয়া প্রস্তাব কোনো ‘কাজের না’, এটি ‘কোনো কিছু হাসিলের জন্য কাউকে জিম্মি করার সামিল’ এবং তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ডেমোক্র্যাটরা।
শনিবার ট্রাম্প এক ভাষণে মূলত দুটো প্রস্তাব দেন। এর একটি হচ্ছে, বাবা-মায়ের সঙ্গে অবৈধভাবে কম বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ড্রিমারদের সুবিধা দেওয়াসহ তাদের অবস্থানের মেয়াদ তিন বছর পর্যন্ত বাড়ানো। আর আরেকটি হচ্ছে, যুদ্ধ ও দুর্যোগ কবলিত দেশগুলোর তিন লাখেরও বেশি যেসব মানুষ টিপিএস সুবিধায় যুক্তরাষ্ট্রে আছে, তাদের অবস্থানের মেয়াদও তিনবছর বাড়ানো।
প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় টুইটারে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ট্রাম্প। বলেছেন, “প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও অন্যান্য ডেমোক্র্যাটরা গতকাল আমি কোনো কথা বলার আগেই প্রস্তাবগুলো নাকচ করে দিয়েছেন।”
ট্রাম্প বলেন, তার বিরোধিতা যারা করছেন তাদের নজর অপরাধ কিংবা মাদকের বিষয়টিতে নেই বরং তারা কেবল ২০২০ সালের নির্বাচনটাই চোখে দেখছেন, যেটাতে তারা জিতবেন না।”
কিন্তু ট্রাম্প যতই ক্ষেপুন এ পর্যন্ত ডেমোক্র্যাটদের কথা একটাই, আর হচ্ছে সরকার ফের সচল না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনো কিছু নিয়েই আলোচনা করবে না।
সিনেটর চাক শুমার বলেছেন, ট্রাম্প এর আগে একা হাতেই ড্রিমারদের পাশাপাশি এবং টিপিএস সুরক্ষা কেড়ে নিয়েছিলেন। আর এখন আবার তাদেরকেই নতুন করে সুরক্ষা দিতে চেয়ে তিনি আদতে কোনো আপোস করা কিংবা ছাড় দেওয়া নয়, বরং তাদেরকে অনেকটা জিম্মিই করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ (হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) বর্তমানে ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রণে আছে। আর সিনেটে এখনো সংখ্যাগরিষ্ঠ ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টি। মেক্সিকো দেয়াল নির্মাণে তহবিল বরাদ্দ হতে হলে দুই কক্ষেরই অনুমোদন লাগবে।
সিনেট এর আগে ট্রাম্পের দাবি মেনে দেয়ালের তহবিল অনুমোদ করেছে। কিন্তু প্রতিনিধি পরিষদ তা করেনি। কিন্তু ট্রাম্প এরপরও তহবিলের বিষয়টিতে অটল থাকায় সরকার আংশিক অচল হয়।
কয়েকটি জনমত জরিপে দেখা গেছে, এ অচলাবস্থার জন্য বেশিরভাগ আমেরিকানই ডেমোক্র্যাটদের চেয়ে ট্রাম্পকেই বেশি দোষারোপ করেছে।