সাততলায় লিফট খুললেই দেখা যায় বগুড়া বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলামের জ্যাকেট ধরে আছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর- সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরাবন্দি করেন ফটো সাংবাদিকরা।
বুধবার দুপুরে বগুড়া শহরতলির গোকুল এলাকায় হোটেল মম-ইনের লিফটে বিএনপি মহাসচিবের এই ছবি নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয়দের মধ্যে।
ঘটনাটি কী ঘটেছিল তা জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম বলেন, বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে তার কোনো হাতাহতির ঘটনা ঘটেনি। লিফটের মধ্যে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁনের সঙ্গে তার তর্কাতর্কি হয়েছিল।
তিনি জানান, মহাসচিব নিজের এলাকা ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকা ফেরার পথে বুধবার বগুড়ায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করতে চেয়েছিলেন। বিষয়টি তাকে জানালে তার এ সময় ঢাকায় অবস্থানের কথা থাকায় সাধারণ সম্পাদককে অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব দেন তিনি।
“কিন্তু কোথায় কীভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে তার ফলোআপ আমাকে জানানো হয়নি। মঙ্গলবার রাতে ঢাকা থেকে ফিরে এসে জানতে পারি, স্থানীয় একটি হোটেলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মহাসচিবকে নিয়ে ওই হোটেলের সাত তলায় লিফটে যাওয়ার সময় আমি সাধারণ সম্পাদককে প্রশ্ন করি, কেন আমাকে ফলোআপ জানানো হলো না। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে তর্ক শুরু হয়।”
এদিকে এ ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হওয়ার পর প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভিপি সাইফুল। তিনি লিখেছেন, “দৈনিক প্রথম আলো অনলাইনে ‘বগুড়ার নেতার সঙ্গে তিক্ততায় মির্জা ফখরুল’ শীর্ষক খবরের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ ধরনের ভিত্তিহীন খবর পরিবেশন করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।”
বগুড়া বিএনপির সভাপতি লিখেছেন, “বিএনপির মহাসচিব একজন সম্মানিত ব্যক্তি। উনার সঙ্গে বাকবিতণ্ডার প্রশ্নই আসে না। উনাকে আমরা সবাই শ্রদ্ধা করি। উনি আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। উনাকে কেন্দ্র করে যে খবর পরিবেশন করা হয়েছে তাহা সঠিক নহে।”
প্রকৃত ঘটনা কী ঘটেছিল- সে প্রশ্ন করলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁনও বলেন, লিফটের ভিতরে অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়ে সভাপতির সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়েছে।
এ সময় বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি পৌর মেয়র এ কে এম মাহবুবুর রহমানও লিফটে ছিলেন।
“লিফট যখন প্রায় সপ্তম তলার কাছাকাছি তখনও বাকবিতণ্ডা চলে। মহাসচিব দুজনকেই বাকবিতণ্ডা থামানোর কথা বলে। এদিকে লিফট সপ্তম তলায় চলে এলেও বাকবিতণ্ডা থামে না।
“লিফটের দরজা খুলে যাওয়ার পর তখন বাইরে এক ঝাঁক অপেক্ষমাণ ফটো সাংবাদিকদের দেখে মহাসচিব উচ্চস্বরে বলেন, এই মিডিয়ার সামনেও তোমরা একি করছ? সভাপতিকে থামানোর জন্যই মিডিয়ার সামনে উনার জ্যাকেট ধরে থামানোর জন্য রাগান্বিত হয়ে ওঠেন।”
এ সময় বাকবিতণ্ডা থেমে গেলেও সভাপতির জ্যাকেট ধরে মহাসচিবের থামানোর চেষ্টার ছবি ফটোসাংবাদিকরা তুলে ফেলেন বলে দাবি করেন তিনি।
জয়নাল আবেদিন বলেন, “আসলে মহাসচিবের সাথে সভাপতির কোনো বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়নি। আমাদের দুই জনের বাকবিতণ্ডা থামাতেই মহাসচিব সভাপতিকে অবদমিত করে।”