চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে ৩০ জানুয়ারি বুধবার।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন সরকারের প্রথম এই মুদ্রানীতি ‘সম্প্রসারণমূলক’ হবে বলে আভাস মিলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কথায়।
তারা বলছেন, গত দশ বছরে বাংলাদেশের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা তৃতীয়বারের দায়িত্ব পালন শুরু করেছে নতুন সরকার। উন্নয়নের সেই ধারাবাহিকতা রাখতে মূল্যস্ফীতি সহনীয় রেখে কাংখিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য ‘সম্প্রসারণমূলক’ মুদ্রানীতি ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৩০ জানুয়ারি বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর ফজলে কবির ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি সম্বলিত ‘মনিটারি পলিসি স্টেটমেন্ট’ ঘোষণা করবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদের মুদ্রানীতির ধারাবাহিকতায় নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে।
“বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে বেসরকারি খাতে ঋণ জোগান যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকে নজর রাখা হবে।”
মুদ্রানীতি প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলো বেশ ইতিবাচক। গত দুই মেয়াদে যেসরকার ছিল সেই সরকারই ফের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে। নতুন সরকার নতুন উদ্যোমে কাজ শুরু করে দিয়েছে।
“তারসঙ্গে তাল মিলিয়েই নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে।”
জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি তার আগের মেয়াদের (জানুয়ারি-জুলাই, ২০১৮) মুদ্রানীতির মতোই ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ ধরা হয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ।
“যেহেতু বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদের লক্ষ্যের চেয়ে কম আছে; সেহেতু এবার একটু সম্প্রসারণের দিকে যাওয়া হতে পারে,” বলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঐ কর্মকর্তা।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। আর গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে রাখার আশা করা করা হয়েছে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। আর গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে আটকে রাখার আশা করা করা হয়েছিল।
অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশে পৌঁছেছে।
আর পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি) ডিসেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
বরাবরের মতো এবারও নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার আগে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, ব্যাংকার ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের ঘোষিত আর্থিক নীতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে প্রতি অর্থবছরে দুটি মুদ্রানীতি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।