জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, মানুষের অধিকার হরণ করে এই সরকার ক্ষমতায় বসে আছে। জনগণের অধিকারের কোনো মূল্য তাদের কাছে নেই। এ কারণেই আদালতের আদেশের পরও গত নয় বছরেও নিমতলী আগুনের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন বাস্তবায়ন হয়নি। চকবাজারের ঘটনায় অবহেলার জন্য খুনের অপরাধে দায়ী হবে সরকার।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে মঙ্গলবার গণফোরাম আয়োজিত চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে নাগরিক শোকসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
পুরান ঢাকাকে কীভাবে নিরাপদ করা যায়, সে বিষয়ে আদালতের আদেশের জবাব জানতে চেয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, কেন নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন বাস্তবায়ন হয়নি তা জনগণকে জানানো হোক। একই সঙ্গে গত নির্বাচনে কীভাবে সরকার নির্বাচিত হয়েছে, তাও জনগণকে জানাতে হবে।
ড. কামাল বলেন, নয় বছর আগে নিমতলীতে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটেছে। তখন আদালত আদেশ দিয়েছিল, এর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হোক। যেসব জায়গায় কেমিক্যাল আছে, সেগুলো ওখান থেকে নিরাপদে অন্য স্থানে সরানোর জন্য বলা হয়েছিল। পুরান ঢাকাকে নিরাপদ করার জন্য সে সময় ১৭টি আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেগুলোর বাস্তবায়ন হয়নি।
সভায় সরকারকে উদ্দেশ করে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, শতাধিক মানুষ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন। আর শোক দিবস পালন করতে সরকারের পাঁচ দিন সময় লেগেছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ার কারণে তাদের কোনো দায়িত্ববোধও নেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, চকবাজারের ঘটনার বাস্তবসম্মত সমাধান করতে হবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এই সরকার সারাবিশ্বে ম্যাজিশিয়ান হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। ২৯ ডিসেম্বর সারা জাতি যখন ঘুমিয়ে কিংবা এবাদতে, তখন তারা ম্যাজিক দেখিয়েছেন। এ সময় সরকারের প্রতি তিনি বিরোধী দলের নেতাদের মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, একটা ডাকাতের কবলে পড়েছে এই দেশ। গত ৩০ ডিসেম্বর এ দেশে কোনো ভোট হয়নি। তবে ২৯ ডিসেম্বর রাতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে জনগণের ভোট ডাকাতি করা হয়েছে।
মান্না আরও বলেন, এই সরকার মনে করেছিল- জনগণের নেত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখলে আর কেউ কথা বলবে না। কিন্তু না, কথা বলতেই থাকব।
ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন গণফোরাম নেতা অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, মেজর জেনারেল আ ম সা আ আমিন, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবীবুর রহমান বীরপ্রতীক প্রমুখ।