সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলী হত্যা মামলার আসামি সাইফুল ইসলাম মামুনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রোববার রাত ১০টা ১ মিনিটে রশিতে ঝুলিয়ে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। আলোচিত হত্যাকাণ্ডের সাত বছর পর শাস্তি কার্যকর হলো।
আদালতে রায় ঘোষণার পর থেকেই মামুন গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে কনডেম সেলে বন্দী ছিলেন। তিনি বাগেরহাটের স্মরণখোলা থানার মধ্যে কোন্তাকাটা এলাকার আব্দুল মোতালেব হাওলাদারের ছেলে।
২০১২ সালের ৫ মার্চ ঢাকার গুলশানে কূটনৈতিক পাড়ায় সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলীকে গুলি করা হয়। পর দিন ভোরে মারা যান খালাফ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করে। ওই মামলায় ওই বছরের জুনে ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। পরে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন।
২০১৩ সালে উচ্চ আদালত মামুনের মৃত্যুদণ্ড বহাল এবং আল আমীন, আকবর আলী লালু ও রফিকুল ইসলাম খোকন নামে ৩ আসামির মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। একজনকে খালাস দেন আদালত।
রোববার মামুনের মা আলেয়া বেগমসহ পরিবারের ৭-৮ জন সদস্য তার সঙ্গে শেষ দেখা করেন। প্রায় আধা ঘণ্টা তারা কথা বলেন।
ফাঁসির প্রস্তুতি দেখতে রাত ৮টার পর কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কে এম মোস্তফা কামাল পাশা করাগারে ঢোকেন। এরপরই কারাগারে নেওয়া হয় লাশ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স। এরপর এডিএম মশিউর রহমান, জেলা সিভিল সার্জন সৈয়দ মঞ্জুরুল হক ও পুলিশ কর্মকর্তারা কারাগারে প্রবেশ করেন। সন্ধ্যা সাতটার পর সৌদি দূতাবাসের একটি প্রতিনিধি দলও কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করেন।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, আগে থেকেই কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে প্রস্তুত করে রাখা ছিল ফাঁসির মঞ্চ ও জল্লাদ। কাশিমপুর কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একটি রুমাল ফেলার সঙ্গে সঙ্গে জল্লাদ রাজু ফাঁসির মঞ্চের লিভার ধরে টান দেন। তাকে সহায়তা করেন আরো দু’জন জল্লাদ। ফাঁসি কার্যকরের আগে একাধিক দফায় চিকিৎসক তার শারীরিক পরীক্ষা করেন। মামুনকে ফাঁসির মঞ্চ থেকে নামানোর পর ময়না তদন্তসহ নানা আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। রাত ১১ টার পরে কারাগার থেকে মামুনের লাশ গ্রহণ করেন তার মা আলেয়া বেগম ও মামা সোহাগ। মামুনের লাশ তার গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান স্বজনরা।