আবারও পেছাল নাইকো দুর্নীতি মামলার শুনানি

khaleda-5c90ff084d197

আসামিপক্ষের সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ (চার্জ) গঠনের ওপর শুনানির তারিখ আবারও পিছিয়ে আগামী ১ এপ্রিল ঠিক করা হয়েছে। পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান মঙ্গলবার নতুন এদিন ধার্য করেন।

মঙ্গলবার এ মামলার শুনানির জন্য দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে হুইলচেয়ারে মামলার প্রধান আসামি কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে এজলাস কক্ষে হাজির করে কারা কর্তৃপক্ষ। শুরুতেই দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল জানান, খালেদা জিয়া ছাড়া সব আসামির চার্জ শুনানি শেষ হয়েছে। গত তারিখে তারা চার্জ শুনানি করতে সময় নিয়েছেন। তারা শুরু করলে মামলার কার্যক্রম শেষ করা যাবে।

এরপর খালেদা জিয়ার পক্ষে মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও জব্দ আলামতের কপি না থাকায় অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি পেছানোর জন্য আদালতের কাছে সময় প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, বারবার আবেদন করেও মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। আদালত আদেশ দেওয়ার পরও কপি পাওয়া যায়নি। তাই প্রস্তুতি নেওয়া যায়নি।

আদালত বলেন, আবেদন তো নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

এ সময় দুদকের পিপি কাজল বলেন, চার্জ শুনানি করতে চার্জ শুনানির আলামত লাগে? আর যেসব পেপার ছিল তা দিয়েছি। চার্জ শুনানি হোক, চার্জ গঠন হওয়ার পর তারা ওই কাগজ পাবেন। তিনি বলেন, মামলার বয়স ১২ বছর। আইন অনুযায়ী চার্জ শুনানির আগে অব্যবহূত কোনো কাগজপত্র সরবরাহ করা যায় না।

তখন বিচারক আইনজীবী মাসুদ তালুকদারকে উদ্দেশ করে বলেন, চার বছর ধরে চার্জ শুনানি চলছে। এতদিনেও আপনারা আবেদন করেননি কেন? আর যে আবেদন দিয়েছেন তা নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। এ আদালত তো দেশের সর্বোচ্চ কোর্ট না। এখানে সবকিছু করা যায় না।

বিচারক মাসুদ তালুকদারের কাছে জানতে চান, তারা খালেদা জিয়ার পক্ষে চার্জ শুনানি করবেন কি-না?

মাসুদ তালুকদার বলেন, কাগজ পেলে আমরা শুনানি করব। এরপর খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, এটা একটি গ্রাউন্ডলেস মামলা। কাগজগুলো পেলে দেখানো যাবে। এজন্য শুনানি পেছানোর জন্য আবেদন করেন তিনি। আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে সময় মঞ্জুর করে শেষবারের মতো আগামী ১ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। এ সময় জব্দ করা আলামতের কপির আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।

এদিন জার্মানিতে চিকিৎসাধীন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের পক্ষে সময় চাইলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। মামলার অপর আসামি গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের পক্ষে তার আইনজীবী তাকে গাজীপুর কাশিমপুর কারাগার, নারায়ণগঞ্জ অথবা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আদালত এ বিষয়ে পরে আদেশ দেবেন বলে জানান।

শুনানির পর খালেদা জিয়া তার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলীর কাছে জানতে চান, মামলায় দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে কি-না? জবাবে আইনজীবীরা জানান, মামলার সব কাগজপত্র পাওয়া গেলে অব্যাহতির আবেদন করা হবে।

মঙ্গলবার আদালতে সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলামসহ অন্যান্য আসামি উপস্থিত ছিলেন। পরে খালেদা জিয়াকে আদালত কক্ষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে আলাপ করতে দেখা যায়। এরপর খালেদা জিয়াকে এজলাস কক্ষ থেকে কারাগারের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়।

কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুদক।

Pin It