টানা তৃতীয় সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও হলো না। তবে শুরুর টালমাটাল সময়টা সামলে দলকে লম্বা সময় টানলেন অ্যারন ফিঞ্চ। শেষ দিকের দাবি মেটালেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। নতুন বলে আগুন ঝরালেন প্যাট কামিন্স। সব মিলিয়ে উড়ে গেল পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়া জিতে নিল সিরিজ।
পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম তিনটি জিতেই অস্ট্রেলিয়া জিতে নিয়েছে সিরিজ। তৃতীয় ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারিয়েছে তারা ৮০ রানে।
আবু ধাবিতে বুধবার ৫০ ওভারে ২৬৬ রান তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তান ৩২ বল আগে গুটিয়ে যায় ১৮৬ রানে।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ভালো ছিল না। ফর্মে থাকা উসমান খাওয়াজাকে ম্যাচের প্রথম ওভারেই বোল্ড করে দেন বাঁহাতি পেসার উসমান শিনওয়ারি। আরেক বাঁহাতি পেসার জুনাইদ খানের শিকার তিনে নামা শন মার্শ। ২০ রানে অস্ট্রেলিয়া হারায় ২ উইকেট।
পিটার হ্যান্ডসকমকে নিয়ে সেই ধাক্কা সামাল দেন ফিঞ্চ। আক্রমণের সহজাত প্রবৃত্তি দমিয়ে রেখে ফিঞ্চ মন দেন এক পাশ আগলে রাখায়। রান দ্রুত বাড়াচ্ছিলেন হ্যান্ডসকম। ৮৪ রানের জুটি ভাঙেন হারিস সোহেল। ৪৩ বলে ৪৭ করে আউট হন হ্যান্ডসকম।
মিডল অর্ডারে মাকার্স স্টয়নিস দাঁড়াতে পারেননি। ম্যাক্সওয়েল উইকেটে যাওয়ার পর নতুন গতি পায় ইনিংস। আগের দুই ম্যাচে সেঞ্চুরিয়ান ফিঞ্চ এগিয়ে যাচ্ছিলেন হ্যাটট্রিক সেঞ্চুরির পথে।
তবে দলের প্রয়োজনের কাছে শেষ পর্যন্ত নিজের মাইলফলক ঝুঁকিতে ফেলেন ফিঞ্চ। ৪২ তম ওভারে ইয়াসির শাহকে ছক্কা মারতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক আউট হন ১৩৬ বলে ৯০ রান করে।
অস্ট্রেলিয়ার রান তখনও আড়াইশ হওয়া নিয়ে শঙ্কা। ম্যাক্সওয়েলের দারুণ সব শটে দল তুলে ফেলে আরও বেশি রান। ২৭ রানে তাকে জীবন দেওয়ার চড়া মূল্য দিতে হয় পাকিস্তানকে। এই ব্যাটসম্যান খেলেন ৫৫ বলে ৭১ রানের ইনিংস। শেষ ১০ ওভারে অস্ট্রেলিয়া তোলে ৯০ রান।
রান তাড়ার শুরুতেই পাকিস্তানের সম্ভাবনা অনেকটা শেষ করে দেন কামিন্স। গতি ও সুইংয়ে গুঁড়িয়ে দেন পাকিস্তানের টপ অর্ডার। ওপেনার শান মাসুদকে দ্রুত ফেরানোর পর দুর্দান্ত প্রথম স্পেলে তার শিকার প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান হারিস ও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ রিজওয়ান।
৭ ওভার শেষে পাকিস্তানের রান ছিল ৩ উইকেটে ১৬। সেই ধাক্কা আর সামাল দিতে পারেনি তারা।
এক পাশে লড়াই করতে থাকা ইমাম-উল-হককে ৪৬ রানে ফিরিয়ে দেন ম্যাক্সওয়েল। শোয়েব মালিক ও উমর আকমল থিতু হয়েও করতে পারেননি বড় কিছু। শেষ দিকে ইমাদ ওয়াসিমের ৪৩ রানে খানিকটা কমেছে ব্যবধান।
৮ রানের মধ্যে শেষ ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচ শেষ করে দেন লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা।
ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর ম্যাক্সওয়েল একটি উইকেট নিলেও নতুন বলে আগুনে স্পেল করে ম্যাচের সেরা কামিন্স।
এই নিয়ে টানা দুটি সিরিজ জিতল অস্ট্রেলিয়া। আগের সিরিজে ভারতের মাটিতে ভারতকে হারানোর পর পাকিস্তানকেও হারাল তাদের হোম ভেন্যুতে। দুই বছরে কেবল চারটি ওয়ানডে জিতেছিল যে দল, সেই দলই আচমকা ঘুরে দাঁড়িয়ে জিতল টানা ছয় ম্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৬৬/৬ (খাওয়াজা ০, ফিঞ্চ ৯০, মার্শ ১৪, হ্যান্ডসকম ৪৭, স্টয়নিস ১০, ম্যাক্সওয়েল ৭১, কেয়ারি ২৫*, কামিন্স ২*; উসমান ১/৩৭, হাসনাইন ০/৫০, জুনাইদ ১/৫৮, ইয়াসির ১/৪৭, ইমাদ ১/৩৪, হারিস ১/৩৫)।
পাকিস্তান: ৪৪.৪ ওভারে ১৮৬ (ইমাম ৪৬, মাসুদ ২, হারিস ১, রিজওয়ান ০, মালিক ৩২, আকমল ৩৬, ইমাদ ৪৩, ইয়াসির ১০*, উসমান ০, জুনাইদ ৫, হাসনাইন ০; কামিন্স ৩/২৪, বেহরেনডর্ফ ১/২৯, স্টয়নিস ০/২১, লায়ন ১/৪১, ম্যাক্সওয়েল ১/২১, জ্যাম্পা ৪/৪৩)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৮০ রানে জয়ী
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ৩-০তে এগিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: প্যাট কামিন্স